পেয়ারা না কি আমড়া
এই সময়ে দুটি পরিচিত ফল পেয়ারা ও আমড়া। যদিও এখন বছরব্যাপী পেয়ারা পাওয়া যায়। দুটি ফলেই রয়েছে প্রচুর ভিটামিন সি, যা আমাদের ত্বক এবং স্বাস্থ্যের জন্য খুবই প্রয়োজনীয়। প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় অল্প পরিমাণে হলেও ভিটামিন সি থাকা প্রয়োজন। সে হিসেবে এ মৌসুমে পেয়ারা কিংবা আমড়া আপনার এই পুষ্টির চাহিদা পূরণ করতে পারে।
💨কিন্তু প্রচুর ভিটামিন সি-সমৃদ্ধ হওয়া কিন্তু দুটি ফলের রয়েছে ভিন্ন পুষ্টি উপাদান। দু। তাহলে কোনটি বেশি উপকারী?
💨যদি বা আমড়ার টক এর পরিমাণ বেশি কিন্তু পেয়ারায় ভিটামিন সির পরিমাণ অনেক বেশি। যেখানে ভিটামিন সি আছে ৯২ মিলিগ্রাম প্রতি১ ০০ গ্রাম আমড়ায় সেখানে কিন্তু পেয়ারায় এর পরিমাণ ২১০ মিলিগ্রাম প্রতি ১ ০০ গ্রাম পেয়ারায়।
👉পেয়ারায় অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট রয়েছে, যা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়।
👉একই সঙ্গে এটি বহুমূত্র রোগীদের জন্যও বিশেষ উপকারী।
👉দৃষ্টিশক্তি এবং ক্যানসার প্রতিরোধেও এটি প্রয়োজনীয়।
অন্য দিকে পেয়ারার অন্যতম সমস্যা হলো বীজ।
☺যাদের কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা রয়েছে তাদের জন্য পেয়ারা এবং এর বীজ না খাওয়াই ভালো।
আবার সেই তুলনায় আমড়ায় এই সমস্যা নেই।
👉এর শর্করা, আমিষ, ভিটামিন বি-২, বিভিন্ন খনিজ পদার্থ দাঁত ও দাঁতের মাড়ি, ঠান্ডা-কাশিতে উপকারী।
👉এতে আয়রন থাকায় রক্তশূন্যতা রোধে সহায়ক।
আপনি চাইলে আমড়া রেঁধে বা আচার করেও সংরক্ষণ করতে পারেন।
তবে এদিকে আমড়ার সমস্যা হলো, এটি প্রচুর টক। যার ফলে অনেকের অ্যাসিডিটির সমস্যা দেখা দেয়।
দুটি ফলই খাওয়া যেতে পারে, তবে অবশ্যই পরিমাণ বুঝে। যাদের কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা রয়েছে তাদের জন্য বেশি পরিমাণে পেয়ারা না খাওয়াই ভালো। আর যাদের অ্যাসিডিটির সমস্যা রয়েছে তারা পরিমিত পরিমাণে আমড়া খেতে পারে।
আমড়া সুস্বাদু ও সহজপ্রাপ্য এবং রুচিকর ফলথেকে আচার, চাটনি ও জেলি তৈরি করা যায়। দামে সস্তা হলেও মুখে রুচি বৃদ্ধিসহ অসংখ্য গুণাগুণ রয়েছে এ ফলের। অনেকে আমড়া তরকারি হিসেবে রান্না করেও খাওয়া যায়।
আমরার ০৮টি পুষ্টিগুণ:
👍১. ক্যালসিয়ামের চাহিদা পূরণ:
📌💧ক্যালসিয়ামের অভাবে হাড়ের রোগ, মাংস পেশীর খিঁচুনিসহ অনেক রোগ হতে পারে। তাই প্রতিদিনের ক্যালসিয়ামের চাহিদা পূরণে আমড়ার খাওয়া যেতে পারে।
👍২. ত্বক ভাল রাখতে:
📌💧ত্বকের ব্রণ কমাতে এবং ত্বক সুস্থ ও উজ্জ্বল রাখতে আমড়া দারুণ উপকারী। আমড়ায় প্রচুর ভিটামিন সি রয়েছে, যা ত্বক উজ্জ্বল রাখতে সাহায্য করে।
👍৩. রক্তস্বল্পতা রোধে:
📌💧আমড়ায় প্রচুর পরিমাণে আয়রন রয়েছে, যা রক্তস্বল্পতা রোধে কার্যকরী। আয়রন রক্তে হিমোগ্লোবিনের মাত্রাও ঠিক রাখে।
x
👍৪. বদহজম ও কোষ্ঠকাঠিন্য প্রতিরোধে:
📌💧আমড়ায় বিভিন্ন দ্রবণীয় ফাইবার রয়েছে, যা পাকস্থলীর কার্যক্রম স্বাভাবিক রাখে। তাই বদ হজম, পেট ফাঁপা ও কোষ্ঠকাঠিন্যের মতো রোগ থেকে বাঁচতে নিয়মিত আমড়া খেতে পারেন।
👍৫. সর্দি-কাশি ও ইনফ্লুঞ্জার বিরুদ্ধে কাজ করে:
📌💧 আমড়া বিভিন্ন ভাইরাসের আক্রমন থেকে রক্ষা করে এবং সর্দি-কাশি ও ইনফ্লুয়েঞ্জা রোগের জীবাণুর বিরুদ্ধে কাজ করে। তাই আমড়ার সিজনে প্রতিদিন এই ফল খেলে আপনি নানান সংক্রমণ থেকে সহজেই রক্ষা পেতে পারেন।
👍৬. ক্যান্সার প্রতিরোধ করে:
📌💧আমড়ায় অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে, যা ক্যান্সারসহ অন্যান্য রোগ প্রতিরোধে সাহায্য করে। ফলে সহজেই সুস্থ থাকা সম্ভব হয়।
👍৭. রুচি বাড়ায়:
📌💧অসুস্থ ব্যক্তিদের মুখের স্বাদ ফিরিয়ে আনতে আমড়ার দারুণ কার্যকর। আমড়া খেলে মুখের অরুচিভাব দূর হয় ও ক্ষুধা বৃদ্ধি পায়। তাই রুচি বাড়াতে নিয়মিত ফলটি খাওয়া যেতে পারে।
👍৮. স্ট্রোক ও হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়:
📌💧আমড়া রক্তের ক্ষতিকর কোলেস্টেরলের মাত্রা কমায়। তাই আমড়া খেলে স্ট্রোক ও হৃদরোগের ঝুঁকি কমে। এতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি রয়েছে যা দাঁত ও মাড়ির বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধ করে।
এবার চুল আলোচনা করা যাক পেয়ারা নিয়েঃ
পেয়ারার পুষ্টিগুণ:
পেয়ারাতে অতি পছন্দনীয় একটি ফল এবং এতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন সি এবং ভিটামিন এ।
🍐একটি মাঝারি বা মধ্যম আকৃতির কমলা থেকেএ কটি পেয়ারাতে ৪ গুণ বেশি ভিটামিন সি রয়েছে । লেবুর তুলনায় প্রায় ১০ গুণ বেশি ভিটামিন এ রয়েছে । এছাড়া অন্য ভিটামিন বি২, ই, কে, ফাইবার, ক্যালসিয়াম, কপার, আয়রন, ফসফরাস এবং পটাসিয়াম তো আছেই।
উপকারিতা:
👍১। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিঃ
📌💧পেয়ারাতে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন সি ও এ রয়েছে। যা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে এবং শরীরকে বিভিন্ন রোগের সাথে যুদ্ধ করার শক্তি প্রদান করে।
👍২। ক্যান্সারের ঝুঁকি হ্রাসঃ
📌💧পেয়ারাতে লাইকোপিন, ভিটামিন সি, কোয়ারসেটিন এর মত অনেকগুলো অ্যান্টি অক্সিডেন্ট উপাদান রয়েছে যা শরীরের ক্যান্সারের কোষ বৃদ্ধি রোধ করে। এটি প্রোসটেট ক্যান্সার এবং স্তন ক্যান্সার প্রতিরোধ করে।
👍৩। হার্ট সুস্থ রাখতেঃ
📌💧যে নিয়মিত পেয়ারা খেলে রক্ত চাপ ও রক্তের লিপিড কমে। পেয়ারাতে প্রচুর পরিমাণ পটাশিয়াম, ভিটামিন সি রয়েছে। পটাশিয়াম নিয়মিত হৃদস্পন্দনের এবং উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রনে বিশেষ ভূমিকা রাখে। নিয়মিত ভাবে লাইকোপিন সমৃদ্ধ গোলাপি পেয়ারা খেলে কার্ডিওভাস্কুলার রোগের ঝুঁকি কমায়।
👍৪। ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণেঃ
📌💧চাইনিজ চিকিৎসা শাস্ত্ররে অনেক বছর ধরে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে পেয়ারা ব্যবহার হয়ে আসছে। ১৯৮৩ সালে American Journal of Chinese Medicine প্রকাশ করেন যে, পেয়ারার রসে থাকা উপাদান ডায়াবেটিস মেলাইটাসের চিকিৎসায় খুবই কার্যকর। ডায়াবেটিস প্রতিরোধে পেয়ারা পাতাও বেশ কার্যকর। কচি পেয়ারা পাতা শুকিয়ে মিহি গুঁড়ো করে ১ কাপ গরম পানিতে ১ চা চামচ দিয়ে ৫ মিনিট ঢেকে রেখে তারপর ছেঁকে নিয়ে পান করতে পারেন প্রতিদিন।
👍৫। ঠান্ডা সমস্যা দূর করতেঃ
📌💧পেয়ারা বিভিন্ন ঠান্ডাজনিত সমস্যা যেমন ব্রংকাইটিস সারিয়ে তুলতে ভূমিকা রাখে । উচ্চ পরিমাণে আয়রন এবং ভিটামিন সি থাকায় এটি শ্লেষ্মা কমিয়ে দেয়। তবে কাঁচা পেয়ারা ঠান্ডা জনিত সমস্যা দূর করতে কার্যকর।
👍৬। রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণেঃ
📌💧পেয়ারা রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এর পটাশিয়াম রক্তচাপ কমাতে সাহায্য করে।
👍৭। দৃষ্টিশক্তি বৃদ্ধিতেঃ
📌💧ভিটামিন এ চোখের জন্য উপকারী। এতে থাকা ভিটামিন এ কর্নিয়াকে সুস্থ রাখে এবং রাতকানা রোগ প্রতিরোধ করে। প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় পেয়ারা রাখুন। কাঁচা পেয়ারা ভিটামিন এ এর ভাল উৎস।
👍৮।মাসিকের ব্যাথা নিরাময়ঃ
📌💧অনেক নারীরই মাসিককালিন পেট ব্যাথা হয়।এ সময় অনেকেই ব্যাথার ঔষধ খেয়ে থাকেন। কিন্তু এ সময় পেয়ারার পাতা চিবিয়ে বা রস খেলে মাসিককালিন ব্যাথা থেকে অধিকতর দ্রুত উপসম পাওয়া যায়।
আশা করি আমাদের প্রত্যেকটি পোষ্ট আপনাদের ভালোলাগবে এবং উপকারে আসবে ।
পাইলস হওয়ার কারণ লক্ষণ ও উপসর্গ সমূহ এবং চিকিৎসা।
সর্দি কাশি ও ইনফ্লুয়েঞ্জা(Common cold and influenza)
ডেঙ্গুজ্বর কী ? প্রকার,লক্ষণ, এবংচিকিৎসা।
ম্যালেরিয়া কী ? প্রকারভেদ,লক্ষণ, এবং চিকিৎসা।
সাইনোসাইটিস কী?লক্ষণ,করণীয় এবং চিকিৎসা।
নিউমোনিয়া কী?লক্ষণ এবং চিকিৎসা।
চিকনগুনিয়া কি?লক্ষণ,কিভাবে ছড়ায়,প্রতিরোধিএবং চিকিৎসা।
শীর্ষ ১০ ধরনের ক্যানসারের আক্রমন হয় বাংলাদেশে।
হুপিং কাশি/ Pertussis কী,লক্ষণ,জটিলতা, এবং চিকিৎসা।
মাম্প্স কী,লক্ষণ / উপসর্গ,মাম্প্স হলে কী কী করণীয়/ ( হোম রেমেডি) এবং চিকিৎসা।
Tonsillitis/টনসিলাইটিস কি? কারণ, লক্ষণ,কী খাওয়া যাবে/যাবে না এবং চিকিৎসা।
করোনাভাইরাসের (কোভিড-১৯) টিকার চতুর্থ ডোজ এবং করোনা মহামারির আতঙ্ক কমে গেলেও সংক্রমণ থেমে নেই।
স্বাস্থ্য ভালো রাখতে খাওয়ার পর যে কাজগুলো করবেন না ?
দুধ -আনারস একসাথে খেলে কি মানুষ মারা যায় ? জেনেনিন এর সঠিক উত্তর ।
পিরিয়ড চলাকালিন মেয়েরা যেসব কাজ থেকে বিরত থাকবেন ।
পর্যাপ্ত ঘুম না হলে ক্ষতি কী । এবং জেনে নিন ঘুম না হলে কী করবেন ?
রাতকানা রোগ কী ? রাতকানা রোগ কেন হয় ? এবং এর প্রতিকার ।
রক্তস্বল্পতা কি ? এর কারণ , লক্ষণ, চিহ্ন, চিকিৎসা এবং উপদেশ ?
কান পাকা রোগ কেন হয় এর কারণ,লক্ষণ,চিহ্ন এবং চিকিৎসা
কনজাংটিভাইটিস বা ( চোখ উঠা ) কি ? এর কারণ , লক্ষণ/চিহ্ন , চিকিৎসা এবং প্রতিরোধ ।
NOTE: সকল ঔষধ রেজিষ্টার্ড চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী সেবন করুন ।