বাংলাদেশের ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবস
১৭ এপ্রিল ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবস।
👉মুজিবনগর সরকার কোথায় ও কবে গঠিত হয়ঃ-
👉১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে ১৭ এপ্রিল মেহেরপুরের বৈদ্যনাথতলা গ্রামের আম্রকাননে স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম অস্থায়ী সরকার আনুষ্ঠানিকভাবে শপথ গ্রহণ করে। পরে এই বৈদ্যনাথ তলাকেই ঐতিহাসিক মুজিবনগর হিসেবে নামকরণ করা হয়।
👉এর আগে ১০ এপ্রিল স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ সরকার গঠিত হয়। সেই ধারাবাহিকতায় ১৭ এপ্রিল বৈদ্যনাথ তলায় অস্থায়ী সরকার শপথ গ্রহণ করেন।
👉১১ এপ্রিল বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দিন আহমেদ দেশবাসীর উদ্দেশ্যে বেতার ভাষণ দেন। তার ভাষণ আকাশ বাণী থেকে একাধিকবার প্রচারিত হয়। ভাষণে তিনি দেশব্যাপী পরিচালিত প্রতিরোধ যুদ্ধের বিস্তারিত বিবরণ তুলে ধরেন। এ ছাড়াও, ১৭ এপ্রিল মন্ত্রিসভার শপথ গ্রহণের তারিখ ও নির্ধারিত হয়।
👉তাজউদ্দিনের ভাষণের মধ্য দিয়েই দেশ-বিদেশের মানুষ জানতে পারেন বাংলাদেশের মুক্তিসংগ্রাম পরিচালনার লক্ষ্যে আইনানুগত সরকার গঠিত হয়েছে। এরই পথ পরিক্রমায় ১৭ এপ্রিল সকালে মুজিবনগরে আনুষ্ঠানিক ভাবে শপথ নেওয়ার মাধ্যমে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার প্রতিষ্ঠা লাভ করে।
👉১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ কালরাতে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী নিরস্ত্র বাঙালির ওপর ঝাপিয়ে পড়েন এবং পরবর্তীতে হামলা চালান বাঙালিদের উপর। এরপর জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান গ্রেপ্তার হওয়ার আগে ২৬ মার্চ বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেন। ১০ এপ্রিল আনুষ্ঠানিক ভাবে সারাদেশ ব্যাপি গণপ্রজাতন্ত্র রূপে বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠা ঘোষণা করা হয়।
👉মুজিবনগর সরকার কাদের নিয়ে গঠিত হয়ঃ-
👉প্রধানমন্ত্রীর সাবেক জনপ্রশাসন বিষয়ক উপদেষ্টা এইচটি ইমাম মুজিবনগর সরকারের মন্ত্রিপরিষদ সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন। তিনি এক সাক্ষাতকারে জানিয়েছেন, ১০ এপ্রিল পাকিস্তানের নির্বাচিত জাতীয় ও প্রাদেশিক পরিষদ সদস্যরা ভারতের পশ্চিমবঙ্গে নির্দিষ্ট একটি গোপন জায়গায় মিলিত হয়ে প্রবাসী সরকার গঠন করেন।
👉এতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে রাষ্ট্রপতি ও সৈয়দ নজরুল ইসলামকে উপ-রাষ্ট্রপতি (অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি) নির্বাচিত করা হয়। সৈয়দ নজরুল ইসলাম পরে তাজউদ্দিন আহমদকে প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত করেন।
👉মন্ত্রিসভার অন্য সদস্যরা হলেন: এম মনসুর আলী (অর্থ বাণিজ্য ও শিল্প) ও এএইচএম কামারুজ্জামান (স্বরাষ্ট্র, সরবরাহ, ত্রাণ, পুনর্বাসন ও কৃষি)। পরবর্তীতে বঙ্গবন্ধুর মন্ত্রীসভার সবচেয়ে ঘৃণিত ব্যক্তি খন্দকার মোশতাক আহমদও (পররাষ্ট্র, আইন ও সংসদ) মন্ত্রী সভার সদস্য ছিলেন।
👉অস্থায়ী সরকারের মুক্তিবাহিনীর প্রধান কমান্ডার হিসেবে নিযুক্ত করেন জেনারেল আতাউল গনি ওসমানী ও মেজর জেনারেল আবদুর রব চিফ অব স্টাফ ।
👉মুজিবনগর সরকারকে ১৫টি মন্ত্রণালয় ও বিভাগে ভাগ করা হয়। এ ছাড়া, কয়েকটি বিভাগ মন্ত্রিপরিষদের কর্তৃত্বাধীনে থাকে। প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় যুদ্ধরত অঞ্চলকে ১১টি সেক্টরে বিভক্ত করে প্রতিটিতে একজন করে সেক্টর কমান্ডার নিয়োগ দেয়। তবে ১০ নং বা নৌ সেক্টরে কোন সেক্টর কমান্ডার ছিলেন না। কমান্ডোরা যখন যে এলাকায় অভিযান করতেন সে সেক্টরের কমান্ডারের অধীনে থাকতেন।
👉মেহেরপুরের সীমান্তবর্তী গ্রাম বৈদ্যনাথতলায় শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন আবদুল মান্নান এমএনএ ও স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র পাঠ করেন অধ্যাপক ইউসুফ আলী এমএনএ। নবগঠিত সরকারের অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি সৈয়দ নজরুল ইসলামকে সেখানে গার্ড অব অনার দেওয়া হয়।
👉পবিত্র কুরআন তেলাওয়াতের মধ্য দিয়ে শুরু হয়েছিল মুজিবনগর সরকারের শপথ অনুষ্ঠান। সেই অনুষ্ঠানে পবিত্র কুরআন তেলাওয়াত করেছিলেন ১৭ বছরের কিশোর মো. বাকের আলী।
👉১৭ এপ্রিল মুজিবনগর সরকারের মন্ত্রীরা শপথ নিলেও ১৮ এপ্রিল মন্ত্রিপরিষদের প্রথম সভায় মন্ত্রীদের দপ্তর বণ্টন করা হয়। মুজিবনগর সরকারের সফল নেতৃত্বে ৯ মাসের সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর বাংলাদেশ বিজয় অর্জনের মধ্যদিয়ে স্বাধীনতা লাভ করে।
👉মুজিবনগর সরকার কবে বিলুপ্ত হয়ঃ-
👉মুজিবনগর সরকার প্রতিষ্ঠিত হয় ১০ই এপ্রিল এবং শপথ গ্রহণ করে ১৭ই এপ্রিল। বাংলাদেশ স্বাধীনতা অর্জন করার পর ১৯৭২ সালের ১২ই জানুয়ারি মুজিবনগর সরকার বিলুপ্ত হয়ে যায়।
👉মুজিবনগর সরকার গঠনের উদ্দেশ্যঃ-
👉মুজিবনগর সরকার গঠনের উদ্দেশ্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ । কারণ এটি ছিলো বাংলাদেশের প্রথম অস্থায়ী সরকার। মুজিবনগর সরকার গঠনের উদ্দেশ্য ছিল বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধকে আরো সুন্দরভাবে পরিচালনা করা।
✌ বাংলাদেশের স্বাধীনতার গবেষনার বাস্তবায়ন এবং আনুষ্ঠানিক ও সাংগঠনিক রূপ প্রদান করা।
✌ মুক্তিযুদ্ধকে সুষ্ঠ ও দক্ষতার সাথে পরিচালনা করে দ্রুত দেশ কে পাকিস্থানি হানাদার বাহিনীর কবল থেকে মুক্ত করা।
✌ মুক্তিযুদ্ধাদের সংগঠন ও প্রশিক্ষণ প্রদান করা।
✌ প্রচার প্রচারোনার মাধ্যমে দেশে ও বিদেশে পাকিস্থানি হানাদার বাহিনী নারকীয় হত্যা কান্ড, ধ্বংসলীলা ও নির্যাতন- নিপীরণ সম্পর্কে ধারণা প্রদান এবং বিশ্বে বাংলাদেশের ভাব মূর্তি বৃদ্ধি করা।
✌ পাকিস্থানি হানসদার বাহিনী ও তাদের এদেশীয় দালালদের অত্যাচারে ভারতে চলে যাওয়া শরণার্থীদের থাকা থাওয়া সু-ব্যবস্থা করা।
👉 ১৭ এপ্রিল মুজিবনগর দিবস উদ্যাপনঃ-
👉এই দিনে ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবস যথাযোগ্য মর্যাদায় উদ্যাপনের জন্য বিভিন্ন কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে। এর অংশ হিসেবে মেহেরপুরের মুজিবনগরের মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতিকেন্দ্রে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করে শ্রদ্ধা জানানো হয়। এরপরে স্মৃতিকেন্দ্রে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়। মুজিবনগর আম্রকাননে বীর মুক্তিযোদ্ধা, পুলিশ, বিজিবি, আনসার ও ভিডিপি, বিএনসিসি, স্কাউটস, গার্ল গাইডস ও স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা গার্ড অব অনার প্রদান করবে এবং বর্ণাঢ্য কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠিত হবে। এরপরে প্রতিবারের মতো মুজিবনগরে গীতিনাট্য জল মাটি ও মানুষ প্রদর্শিত হবে। দিবসটি উদ্যাপন উপলক্ষে জাতীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে মেহেরপুর জেলার মুজিবনগর উপজেলায় এই দিনে সরকারি ছুটি ঘোষণা করা হয়।
আশা করি আমাদের প্রত্যেকটি পোষ্ট আপনাদের ভালোলাগবে এবং উপকারে আসবে ।
বিজ্ঞান থেকে আসা গুরুত্বপূর্ণ ৫০ টি প্রশ্ন/উত্তর
বাংলাদেশের সকল জাতীয় দিবস সমূহ
বাংলা ব্যাকরণ. ধ্বনিতত্ত্ব থেকে কিছু গুরত্বপূর্ণ প্রশ্ন/উত্তর
বাংলাদেশ স্বাস্থ্যসেবা সাধারন জ্ঞান
স্বামী স্ত্রীর রক্তের গ্রুপ এক হলে কি কোনো সমস্যা হয় ?
স্বাস্থ্য ভালো রাখতে খাওয়ার পর যে কাজগুলো করবেন না ?
দুধ -আনারস একসাথে খেলে কি মানুষ মারা যায় ? জেনেনিন এর সঠিক উত্তর ।
পিরিয়ড চলাকালিন মেয়েরা যেসব কাজ থেকে বিরত থাকবেন ।
পর্যাপ্ত ঘুম না হলে ক্ষতি কী । এবং জেনে নিন ঘুম না হলে কী করবেন ?