তারাবির নামাজ কী? তারাবি নামাজের নিয়ম, নিয়ত দোয়া, এবং মহিলাদের তারাবি নামাজের নিয়ম কানুন !
তারাবির নামাজ কি?
তারাবিহ নামাজ হল বিশেষ মুসলিম প্রার্থনা যার মধ্যে কুরআনের দীর্ঘ অংশ পাঠ করা হয়।
অন্তরে শুধু সুন্নতে মোয়াক্কাদা তারাবির নামাজের নিয়ত করে তাকবির বলবে। তারাবির নামাজের শুরুতে একবারে বিশ রাকাতের নিয়ত করার দ্বারা নামাজ সহিহ হয়ে যাবে। তারাবির নামাজের চার রাকাত পর বিরতির মধ্যে নির্দিষ্ট কোনো আমলের নির্দেশ নেই। তাই ওই সময় টা চুপ করে বসে থাকলেও কোনো রকম ক্ষতি নেই।
পবিত্র রমজান মাসে ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা বিভিন্ন ইবাদত করে থাকেন। সংযমের এ মাসে তারাবির নামাজ গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। এটি হলো সুন্নাতে মুয়াক্কাদা। বিশ্বনবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ)নিজে তারাবির নামাজ আদায় করেছেন এবং সাহাবীদেরও তা আদায়ের জন্য বলেছেন।
তারাবির নামাজের ফজিলত ও মর্যাদা সম্পর্কে বিশ্বনবী (সাঃ) বলেন যিনি মানের সঙ্গে পুণ্য লাভের আশায় রমজানে তারাবির নামাজ শেষ করে তার অতীতের সব গুনাহ মাফ হয়ে যায়।
তারাবির নামাজের নিয়মঃ
সুরা তারাবির মাধ্যমে নামাজ আদায় করলেও নামাজ আদায় হবে। তারাবির নামাজ পড়ার নিয়ম হলো এশার নামাজের চার রাকাত ফরজ ও দুই রাকাত সুন্নতের পর এবং বিতর নামাজের আগে দুই রাকাত করে ১০ সালামে যে ২০ রাকাত নামাজ আদায় করা হয়। আর এ নামজকেই তারাবির নামাজ' বলা হয়। তারাবি নামাজের নিয়ত আরবি এবং বাংলা উভয়ভাবে নিয়ত করা যাবে।
তারাবির নামাজের নিয়তঃ
⌛আরবিঃ نويت ان اصلى لله تعالى ركعتى صلوة التراويح سنة رسول الله تعالى متوجها الى جهة الكعبة الشريفة الله اكبر.📗
উচ্চারণঃনাওয়াইতু আন উসালিয়া ল্লিলাহি তাআ’লা. রাকাআ’তাই সালাতিত তারাবিহ সুন্নাতু রাসুল্লিলাহি তাআ’লা। মুতাওয়াযজ্জিহান ইলা যিহাতিল কা’বাতিশ শারিফাতি. আল্লাহু আকবার।
এছাড়া তারাবির নামাজ যদি জামাআতের সঙ্গে আদায় হয় তবে বলতে হবে ইক্বতাদাইতু বি হাজাল ইমাম।
তারাবি নামাজের চার রাকাআ’ত পরপর দোয়াঃ
⌛আরবিঃسبحان ذى الملك والملكوت سبحان ذى العزة والعظمة والهيبة والقدرة والكبرياء والجبروت . سبحان الملك الحى الذى لاينام ولا يموت ابدا ابدا سبوح قدوس ربنا ورب الملئكة والروح.📗
উচ্চারণঃ
সুব্হানাযিল মুলকি ওয়াল মালাকুতি. সুব্হানাযিল ইয্যাতি. ওয়াল আয্মাতি. ওয়াল হাইবাতি. ওয়াল কুদরাতি. ওয়াল কিবরিয়াই. ওয়াল যাবারুত। সুব্হানাল মালিকিল হাইয়্যিল্লাজি লা-ইয়াানামু ওয়ালা ইয়ামুতু আবাদান আবাদা। সুব্বুহুন কুদ্দুছুন রাব্বুনা ওয়া রাব্বুল মালাইকাতি ওয়ার রূহ।
তারাবির নামাজ শেষে মুনাজাতের দোয়াঃ
⌛আরবিঃ اَللَهُمَّ اِنَّا نَسْئَالُكَ الْجَنَّةَ وَ نَعُوْذُبِكَ مِنَ النَّارِ يَا خَالِقَ الْجَنَّةَ وَالنَّارِ- بِرَحْمَتِكَ يَاعَزِيْزُ يَا غَفَّارُ يَا كَرِيْمُ يَا سَتَّارُ يَا رَحِيْمُ يَاجَبَّارُ يَاخَالِقُ يَابَارُّ - اَللَّهُمَّ اَجِرْنَا مِنَ النَّارِ يَا مُجِيْرُ يَا مُجِيْرُ يَا مُجِيْرُ- بِرَحْمَتِكَ يَا اَرْحَمَ الرَّحِمِيْنَ📗
উচ্চারণঃ
📗📘আল্লাহুম্মা ইন্না নাসআলুকাল জান্নাতা ওয়া নাউজুবিকা মিনাননার। ইয়া খালিক্বাল জান্নাতি ওয়ান নার। বিরাহমাতিকা ইয়া আঝিঝু ইয়া গাফফার, ইয়া কারিমু ইয়া সাত্তার, ইয়া রাহিমু ইয়া ঝাব্বার, ইয়া খালিকু ইয়া বার্রু। আল্লাহুম্মা আঝিরনা মিনান নার। ইয়া মুঝিরু, ইয়া মুঝিরু, ইয়া মুঝির। বিরাহমাতিকা ইয়া আরহামার রাহিমিন।📎
মহিলাদের তারাবির নামাজ পড়ার নিয়মঃ
তারাবীহ নামায নারী-পুরুষ সকলের জন্য সুন্নাতে মুআক্কাদাহ। তারাবীহ নামায আদায়ে নারীদের আলাদা কোন নিয়ম নেই। পুরুষের মত-ই তারা মসজিদে গিয়ে বা ঘরেই তারাবীহ নামায আদায় করতে পারেব।তবে নারিরা বা মহিলারা ঘরেই তারাবীহ করে নেওয়া উত্তম।
প্রিয় নবী (সাঃ)বলেন তোমরা তোমাদের মহিলাদেরকে মসজিদে যেতে বাধা দিও না। অবশ্য তাদের ঘরই তাদের জন্য উত্তম।
তারাবীর নামায সুন্নতে মুয়াক্কাদা। নারীদের জন্যে কিয়ামুল লাইল (রাতের নামায) ঘরে পড়া উত্তম। যেহেতু নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন নারীদেরকে মসজিদে যেতে বাধা দিও না। তবে তাদের জন্য ঘরই উত্তম।
নারীরা তারাবি নামাজ মসজিদে আদায় করতে যে শর্ত গুলো মানতে হবে সেগুলো হলোঃ
👉পরিপূর্ণ হিজাব থাকতে হবে।
👉সুগন্ধি লাগিয়ে যাবে না।
👉স্বামীর অনুমতি লাগবে।
যদি কোনো নারী এই শর্তগুলোর মধ্যে কোনটি শর্ত ভঙ্গ করেন তাহলে তার ক্ষেএে সেই নারীর স্বামী অথবা অভিভাবক সেই নারীকে মসজিদে যেতে বাধা দেওয়া আবশ্যক হবে।
তারাবি নামাজ যদি কেও আদায় না করে সে ব্যক্তি অবশ্যই গুনাগার হবে। তারাবি নামাজের গুরুত্ব এবং ফজিলত অপরিসীম কারণ হলো রমজান মাসে যেসব বৈশিষ্ট্যের জন্য মহিমান্বিত তাহার মধ্যে অন্যতম আমল হলো তারাবির নামাজ রসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তারাবির নামাজ অন্তত গুরুত্ব দিয়ে আদায় করতেন বলেছেন (সহি হাদিস দ্বারা প্রমাণিত)।