রোজায় আপনি কোন খাবার গুলো খেলে সুস্থ থাকবেন ।
👳রমজান মাসে টানা ১৪-১৫ ঘন্টা না খেয়ে থাকতে হয়। এ সময় দিনের বেলা আমাদের শরীর যকৃত ও পেশীতে জমানো শর্করা ও ফ্যাট থেকে শক্তি লাভ করে। শরীরে পানি জমা থাকে না। ঘাম এবং প্রসাবের সাথে পানি বের হয়ে যায়।পানিশূন্যতা হয় বলে মাথাব্যথা মাথাঘোরা ও দুর্বলতা দেখা দেয়। এ ছাড়া অ্যাসিডিটি গ্লুকোজ কমে যাওয়ার মতো সমস্যাও দেখা দেয় রোজার মাসে।
সেহরিতে আপনি যে খাবার খাবেন !
প্রচুর আঁশসমৃদ্ধ খাবারঃ
👉যেসব খাবার প্রচুর পরিমাণ আঁশসমৃদ্ধ সেগুলো শোষণ করে নিতে শরীর বেশি সময় নেয়। ফলশ্রুতিতে রোজা রাখা অবস্থায় অতিরিক্ত সময়ের জন্য শরীর থাকে শক্ত সামর্থ্য এবং ক্ষিদে পায় কম। আম, গাজর.আপেল.গাজর.বাদাম.কলা.ডাল হতে পারে আঁশ সমৃদ্ধ খাবারের উদাহরণ।
কার্বোহাইড্রেট সমৃদ্ধ খাবারঃ
👉রোজা রাখা অবস্থায় আপনার দেহে পর্যাপ্ত কার্বোহাইড্রেট এর জুড়ি নেই। এই উপাদানের উপস্থিতি নিশ্চিত করতে সেহেরীতে পরিমিত পরিমাণ ভাত, আলু, কর্ণ সূপ কিংবা দুধজাতীয় খাবার রাখুন।
পর্যাপ্ত পরিমানে পানিঃ
👉সেহরিতে উঠে কিছুক্ষন পর পর পানি পান করবেন। রোজা রেখে প্রতিদিন কমপক্ষে ৭-৮ গ্লাস পানি পান করা উচিৎ। এটা আপনার হজম ক্ষমতা বৃদ্ধি করবে এবং এই পদ্ধতিতে আপনি পানিও খেতে পারবেন অনেক বেশি পরিমাণে।
ডিমঃ
👉ডিমে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন। যা খেলে মাংসপেশি থাকবে শক্তিশালী এবং আপনি পাবেন সারাদিন রোজা রাখার মত প্রয়োজনীয় শক্তি।
পানি সমৃদ্ধ ফল এবং সবজিঃ
👉যেসব ফলে প্রচুর পরিমাণ পানি রয়েছে সেগুলো খেলে পানি তৃষ্ণা কম পাবে।দেহের পানিশূন্যতা পূরণে সেহরি তে খেতে পারেন তরমুজ,আপেল,তাল কিংবা কমলা।
রমজানের সময়সূচী-2023 |
কম ফ্যাট সমৃদ্ধ দুধঃ
👉কম ফ্যাট সমৃদ্ধ দুধ শরীরের জন্য উপকারি। সেহরিতে এক গ্লাস দুধ হতে পারে আপনার সারাদিনের চালিকা শক্তি। সাশ্রয়ী মূল্যে বিশুদ্ধ দুধ পেতে পারেন
সেহরিতে আপনি যে খাবার খাবেন না !
ক্যাফেইনড ড্রিংকসঃ
👉চা.কফি খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে।ক্যাফেইন জাতীয় পানীয় আপনার তৃষ্ণা ও শরীরের তাপমাত্রা কে আরো বাড়িয়ে দিবে।
👉ভারী এবং অধিক পরিমাণ খাবারঃ রোজা রাখা অবস্থায় যেনও ক্ষুধা না লাগে, এজন্য অনেকেই সেহরিতে অনেক ভারি খাবার খেয়ে থাকে, যা কখনোই করা উচিত নয়। এটা করলে আপনার পাকস্থলীর উপর পড়বে অতিরিক্ত চাপ এমনকি হতেও পারে হজমজনিত বিভিন্ন সমস্যা।
লবণযুক্ত খাবারঃ
👉পরিহার করুন অতিরিক্ত লবণ যুক্ত খাবার। কারন এ জাতীয় খাবার খেলে দেহে পানিশূন্যতা তৈরি হয়।
পরিহার করুন মাত্রাতিরিক্ত পানি পানঃ
👉আপনি জেনে অবাক হতে পারেন, সেহরি তে অনেক বেশি পানি পান ডেকে আনতে পারে হজমজনিত সমস্যা। তবে এটা অনেকটাই নির্ভর করে আপনি কতটুকু গ্রহণ করে অভ্যস্ত তার উপর।
👉ইফতারে আমরা বেশি খেয়ে ফেলি আর তাতে ভাজা পোড়া খাবারই বেশি থাকে। এই জন্যে পেট ফাপা.বুক-গলা জ্বলা,বমি বমি ভাব হয়। পাকস্থলি ফাঁকা খাকার পর শুরুতেই অতিরিক্ত মিষ্টিজাতীয় খাবার, তৈলাক্ত এবং লবণাক্ত খাবার খেলে অ্যাসিডিটি তো বাড়বেই,সঙ্গে পানির তৃষ্ণা এবং ক্ষিদে বাড়িয়ে দেয়। ইফতার এর পর থেকে সাহরি পর্যন্ত তাই উচ্চ আঁশযুক্ত খাবার, ফল, সব্জি, বাদাম এবং পানিকে প্রাধান্য দিতে হবে। আসুন আমরা জেনে নেই ইফতার রাতের খাবার এবং সাহরিতে কোন ধরনের খাবার খেলে আমাদের শরীর সুস্থ থাকবে।
ইফতারে আপনি যে খাবার খাবেন !
👍খেজুর বা খোরমা দিয়ে ইফতার শুরু করবেন। ইফতারের পর থেকে সেহরির আগ পর্যন্ত ৮-১০ গ্লাস পানি না খেলে হজমের সমস্যা হতে পারে। তাই ইফতারের পর পানি পান করার চেষ্টা করুন। সবজি এবং ফল খাবেন। ইফতারে রাখবেন আমিষ, ভিটামিন, শর্করা, চর্বি খনিজজাতীয় খাবার।
👍আঁশযুক্ত খাবারের মধ্যে লাল আটা, বাদাম, বিনস, ছোলা, ডাল ইত্যাদি খেতে পারেন। কলা খাবেন। কারণ, একটি কলায় প্রায় ১০৫ ক্যালরি থাকে। রোজার শেষে শরীর, মস্তিষ্ক ও স্নায়ুকোষ খাবারের মাধ্যমে তাৎক্ষণিক শক্তির যে দরকার হয় কলা সেইটা ভালোভাবে পূরণ করতে পারে।
👍প্রোটিন, ক্যালসিয়াম, আয়োডিন ও ভিটামিন ডি সমৃদ্ধ ভালো মানের দই রাখা যেতে পারে খাদ্য তালিকায়। রান্না ছোলা থেকে কাচা ছোলায় পুষ্টিগুন বেশি, কেননা ভিটামিন, খনিজ লবণ, ম্যাগনেসিয়াম, ফসফরাস এবং উচ্চ মাত্রার প্রোটিন সমৃদ্ধ কাঁচা ছোলাকে অতিরিক্ত তেল মসলা দিয়ে রান্না করলে এর পুষ্টিগুন ব্যাহত হয়।
ইফতারে আপনি যে খাবার গুলো পরিহার করবেন !
👎অতিরিক্ত তেল ও মসলাযুক্ত খাবার ছোলা ভুনা, পেঁয়াজু, বেগুনি, চপ, হালিম, বিরিয়ানি ইত্যাদি বাদ দিতে হবে। পাশাপাশি চিনিযুক্ত খাবার খাবেন না। আর ইফতারের পর বেশি দুর্বল লাগলে ডাবের পানি বা স্যালাইন খেতে পারেন।
আপনি রাতে যে খাবার খাবেন !
👍রাতের খাবার ইফতারের পর রাতে হালকা খাবার খাওয়াই উত্তম। রাতে অল্প পরিমাণে ভাত, লাল আটার রুটি, প্রোটিনের উৎস হিসেবে বিনস্ ডাল ও আশের চাহিদা পূরণের জন্য সালাদ থাকতে পারে।