রমজানের বিধিবিধান ফরজ, ওয়াজিব, সুন্নত এবং নফল আমলসমূহ
👉রমজান মাসের পরিপূর্ণ সুফল পেতে চাই সম্পূর্ণ প্রস্তুতি এবং পরিপূর্ণ আমলের মাধ্যম।রোজার নিয়ম কানুন মাসআলা মাসায়েল ভালোভাবে জানতে হবে এবং সেই নিয়মে আমল করলেই রমজানের শিক্ষা লক্ষ্য ও এর উদ্দেশ্য হাসিল হবে। এইটা না হলে রোজা উপবাসের ভিন্ন আর কোনো কিছু নেই।
👊রমজানের ফরজঃ
👉রমজান মাসের ফরজ আমল হলো একটি ১ মাস রোজা পালন করা। কোরআনে আল্লাহ তায়ালা বলেন। হে মুমিনগণ! তোমাদের জন্য রোজা ফরজ করা হলো। যেমন ফরজ করা হয়েছিল তোমাদের পূববর্তীদের ওপর যাতে করে তোমরা মুত্তাকি হতে পারো (সুরা বাকারা)। প্রাপ্তবয়স্ক স্বাভাবিক জ্ঞানসম্পন্ন শারীরিকভাবে রোজা পালনে সক্ষম মুসলমানের প্রতি রোজা ফরজ।
👊রমজানের ওয়াজিবসমূহঃ
আরো পড়ুন
👊রমজানের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ওয়াজিব দুটি যথা:
১) সদকাতুল ফিতর আদায় করা এবং ঈদের নামাজ আদায় করা। ঈদের দিন সকালে যেই ব্যক্তি নিসাব পরিমাণ সম্পদের মালিক কিংবা অধিকারী থাকবেন সে তার নিজের এবং পরিবারের সকল সদস্যদের ফিতরা আদায় করবে।
২) যদি কোন ব্যক্তি নিসাব পরিমাণ সম্পদের মালিক না থাকেন তাহলে সেই ব্যক্তি সুন্নত কিংবা নফল হিসেবে হলেও সদকাতুল ফিতর প্রদান করা উত্তম।
👉সাহাবি হজরত আবুসাঈদ খুদরী (রা:) বলেন রাসুল (সাঃ)এর জমানায় আমরা ঈদের দিনে এক সা পরিমাণ খাদ্য পণ্য সদকাতুল ফিতর হিসেবে প্রদান করতাম। তিনি আরও বলেন তখন আমাদের খাদ্যপণ্য ছিল যব. কিশমিশ. পনির এবং খেজুর (বুখারি শরিফ)।
রমজানের সুন্নতসমূহঃ
✌ বিশ রাকাত তারাবিহ সালাত আদায় করা।
✌ সেহরি খাওয়া. তাহাজ্জুদ নামাজ আদায় করা. ইফতার করা ও করানো. কোরআন করিম বেশি বেশি তিলাওয়াত করা
✌শেষ দশ দিন ইতিকাফ করা।
✌ শেষের দশ দিনের বেজোড় রাতগুলোতে শবে কদর খুজে বের করা। এবং এই দোয়া পড়া।
👉[আল্লাহুম্মা ইন্নাকা আফুউন তুহিব্বুল আফওয়া ফাফু আন্নী] 👉অর্থ হলোঃ হে আল্লাহ” আপনি ক্ষমাশীল” ক্ষমা করা পছন্দ করেন” সুতরাং আমাকে ক্ষমা করে দিন। (তিরমিজি. ইবনে মাজাহ. নাসায়ী. মুসনাদে আহমাদ)।
বিশেষ নফল আমলসমূহঃ
👉রমজানে মাসের প্রতিটি ইবাদতের বিনিময়ে ৭০গুণ বৃদ্ধি করে দেওয়া হয়। কোনো ব্যক্তি যদি একটি নফল ইবাদত পালন করে তাহলে তার আমল নামায় একটি ফরজ পালন করার সমান সওয়াব দেওয়া হয়। তার জন্য রমজানের নফল ইবাদত খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
👊 রমজান মাসের বিশেষ নফল আমলসমূহ হলোঃ
✌ কোরআন শরিফ একাধিকবার খতম করা কিংবা পূর্ণ পাঠ করা।
✌কালিমা তৈয়্যবা বেশি বেশি পাঠ করা দরুদ শরিফ বেশি বেশি পাঠ করা
✌ তওবা ও ইস্তিগফার করতে থাকা।
✌ সর্বদা তসবি তাহলীল ও জিকির করতে থাকা।
✌দীনী শিক্ষা ও দীনী দাওয়াতি কাজে মশগুল থাকা;
✌ ধর্মীয় বই-পুস্তক. তাফসির. হাদিস. ফিকাহ এবং ইসলামি সাহিত্য নিজে পড়া এবং অপরজনকে পড়তে সাহায্য করা।
✌ দীনী মজলিশ ও মাহফিল আয়োজন করা।
✌ আরো বলেছেন “শ্রমিকদের এবং কর্মচারী কাজের চাপ কমিয়ে দেওয়া।তাদের পূর্ণ মজুরি এবং অতিরিক্ত সম্মানী প্রদান করা”।
✌ বেশি বেশি দান খয়রাত করা।
✌ ইহসান তথা সদা আল্লাহর অস্তিত্বের উপস্থিতির ধ্যান করা। আল্লাহর সঙ্গ বাস্তবে অনুভব করা কিংবা আল্লাহর সার্বক্ষণিক নজরদারির চেতনা মনে জাগ্রত রাখা। (বুখারি: ৪৮)।
✌ রমজানে পবিত্রতা রক্ষা করা সকল প্রকার অন্যায় অবিচার জুলুম অশ্লীলতা ও পাপাচার থেকে দূরে থাকা ও অন্যদেরও দূরে রাখা কারও সঙ্গে দুর্ব্যবহার না করা সবার সঙ্গে ক্ষমা ও দয়ার আচরণ করা
✌ আত্মীয়-স্বজনের খোঁজ-খবর নেওয়া ও তাঁদের সাহায্য সহযোগিতা করা
✌ গরিব আত্মীয়স্বজন ও পাড়া-প্রতিবেশীদের সেহরি ও ইফতারের ব্যবস্থা করা
✌ মা–বাবা. ভাই-বোন. স্ত্রী-সন্তানদের সামর্থ্য অনুযায়ি নতুন জামা-কাপড় এবং বিভিন্ন উপহার দেওয়া। রমজানের অতীব গুরুত্বপূর্ণ অনুষঙ্গ মাহাত্ম্যপূর্ণ ইবাদত।