গর্ভকালীন সময়ে মায়ের যত্ন
গর্ভকালীন যত্নে সংজ্ঞাঃ
👯সমগ্র গর্ভকালীন সময়ে অর্থাৎ ঋতুস্রাব বন্ধ হয়ো থেকে শুরু করে প্রসব না হওয়া পর্যন্ত অন্তবর্তীকালীন সময়ে গর্ভবতী মা এবং তার পেটের সন্তানের যত্ন নেওয়াকে গর্ভকালীন যত্ন বলা হয়। নিয়মিত পরীক্ষা এবং উপদেশ প্রদানের মাধ্যমে ইহা পরিচালিত হয়।
গর্ভধারণ প্রক্রিয়াঃ
👧👨 গর্ভ শুরু হয় একটি পরিপক্ক ডিম্ব ও একটি শুক্রের মিলনের মাধ্যমে। এই প্রক্রিয়াকে নিষিক্তকরণ বলা হয়। সহবাসের সময় শুক্রকীট স্ত্রীর যোনিনালীতে পতিত হয় এবং তা জরায়ু অতিক্রম করে ডিম্ববাহীনালীর মধ্যে প্রবেশ করে, পরিপক্ক ডিম্বের সাথে মিলিত হয়ে ডিম্বকে নিষিক্ত করে। এই নিষিক্ত ডিম্ব ধীরে ধীরে ডিম্ববাহীনালী দিয়ে ৫-৭ দিন পরে জরায়ুতে আসে এবং গর্ভসঞ্চার করে।
WHO সুপারিশকৃত ৪ বার পরীক্ষার সময়সূচীঃ
👉১ম ভিজিট = ১৬ সপ্তাহ (৪ মাস)
👉২য় ভিজিট = ২৪-২৮ সপ্তাহ (৬-৭ মাস)
👉৩য় ভিজিট = ৩২ সপ্তাহ (৮ মাস)
👉৪র্থ ভিজিট = ৩৬ সপ্তাহ (৯ মাস)
ক) গর্ভবতী মায়ের শারীরিক যত্ন
১। গর্ভবর্তী মায়ের খাদ্য:
👬গর্ভবতী মায়ের খাদ্য সুষম হওয়া আবশ্যক। সুষম খাদ্যে সব কয়টি খাদ্য উপাদান পর্যাপ্ত পরিমাণে থাকে এবং পরিবেশনের পরিমাণও থাকে।
গর্ভবতী মায়ের খাদ্যে যে উপাদানটি যে পরিমাণে থাকা আবশ্যক তা নিম্ম রূপ----
প্রোটিন-
👬গর্ভবতী মায়ের জরায়ু, প্লাসেন্টা, আম্বিলিকাল কর্ড, স্তনের বৃদ্ধি, হিমোগ্লবিন, রক্তরস, ভ্রণের বিকাশমান অঙ্গ ও কলায় প্রোটিন সংশ্লেষণ ও সঞ্চয়ের কারণে গর্ভাবস্থায় স্বাভাবিকের তুলনায় অধিক পরিমাণে প্রোটিন প্রয়োজন। এই প্রোটিন মাছ, মাংস, ডিম, দুধ, ডাল থেকে পাওয়া যায়। গর্ভাবস্থায় ৫ মাস পর থেকে দৈহিক ৬৫ গ্রাম প্রোটিন গ্রহণের সুপারিশ করা হয়।
ক্যালরি-
👬গর্ভাবস্থায় মায়ের জনন অঙ্গের বৃদ্ধি-বিকাশ এবং ভ্রণের বিপাক হার মায়ের সাথে যুক্ত হওয়ায় মৌল বিপাক হার বৃদ্ধি পায়। এসব কারণে গর্ভধারণের ৩ মাস পর থেকে অতিরিক্ত ৩০০ কিলোক্যালরি (২১০০+৩০০=২৪০০ ক্যালরি) খাদ্য গ্রহণ করা আবশ্যক। ভাত, রুটি, চিনি, গুড় ইত্যাদি কার্বোহাইড্রেট জাতীয় খাদ্য থেকে ক্যালরির চাহিদা পূরণ করা যায়।
খনিজ লবণ- ভ্রণের হাড়ের গঠন ও দৃঢ়তার জন্য ক্যালসিয়াম ও ফসফরাস দরকার হয়। গর্ভাবস্থায় দৈনিক ১,০০০ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম আবশ্যক, যার জন্য দৈনিক ১ গøাস দুধ/৫০ গ্রাম ছোট মাছ খেতে হবে।
🍉লৌহের অভাবে রক্তশূন্যতা দেখা দেয়। তাই দৈনিক ২৫-৩৫ মিলিগ্রাম লৌহ গ্রহণ করা আবশ্যক। এ চাহিদা পূরণের জন্য কলিজা ও সবুজ শাক সবজি খেতে হবে। গর্ভাবস্থায় থাইরয়েড হরমোনের ক্ষরণ বৃদ্ধি পায়। তাই দৈনিক ১২৫ মাইক্রোগ্রাম আয়োডিন গ্রহণ করা আবশ্যক, যা আয়োডিনযুক্ত লবণ ও সামুদ্রিক মাছ থেকে পাওয়া যাবে।
ভিটামিন- গর্ভাবস্থায় দৈনিক ৫৫ মিলিগ্রাম ভিটামিন ‘সি’ এবং ৫,০০০ ওট ভিটামিন ‘এ’ গ্রহণ করা আবশ্যক। হাড়ের গঠনের জন্য ভিটামিন ‘ডি’ এর প্রয়োজনীয়তা বৃদ্ধি পায়। গর্ভাবস্থায় ভ্রণের নতুন কোষ সৃষ্টির জন্য ফলিক এসিডের চাহিদা বৃদ্ধি পায়। তাই গর্ভাবস্থার প্রথম থেকেই দৈনিক ৪০০ মাইক্রোগ্রাম ফলিক এসিড, ২৫০ গ্রাম শাক-সবজি এবং ৫৫ গ্রাম ফল খাওয়া আবশ্যক।
পানি-
২। পোশাক: সুতি কাপড়ের ঢিলেঢালা পোশাক ব্যবহার করতে হবে। হিল জুতা পরিহার করতে হবে।
৩। ভ্রমণ: গর্ভধারণের প্রথম ও শেষ দিকে ভ্রমণ সচেতন হওয়া আবশ্যক। ঝুঁকিপূর্ণ ভ্রমণ থেকে বিরত থাকতে হবে।
৪। গোসল: প্রতিদিন হাল্কা গরম পানি দিয়ে গোসল করা আবশ্যক।
💨প্রতিদিন মলত্যাগের অভ্যাস করা আবশ্যক। ফল, শাক সবজি, ইসবগুলের ভুসি, বেলের শরবত কোষ্ঠ পরিষ্কারে সহায়ক।
৬। ব্যায়াম ও বিশ্রাম:
👬প্রতিদিনের স্বাভাবিক কাজকর্ম ও সকাল-সন্ধ্যা হাঁটা উচিত। ভারী কাজ করা থেকে বিরত থাকতে হবে। দুপুরে বিছানায় শুয়ে বিশ্রাম নিতে হবে। দৈনিক ৮ ঘন্টা ঘুম দরকার।
৭। পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা:
🍚রাতে খাবার গ্রহণের পর ও সকালে দাঁত ব্রাশ করতে হবে এবং চুল, নখ, পরিধেয় কাপড় ও পরিবেশ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে।
৮। টিকা প্রদান:
💉গর্ভাবস্থার পূর্বে যদি কোনো নারীর ৫ বার টিটেনাস টিকা দেয়া থাকে, তবে গর্ভাবস্থায় তার আর কোনো টিকার প্রয়োজন নেই। তা না হলে গর্ভকালীন ৫ম/৬ষ্ঠ মাসে ১টি টিটি টিকা এবং ১ মাস পর আরেকটি টিকা দিতে হবে। পরবর্তী গর্ভধারণ ৫ বছরের মধ্যে হলে তখন শুধুমাত্র ৫ম মাসে একটি টিকা দিলেই চলবে। কিন্তু দুই গর্ভধারণের বিরতি ৫ বছরের বেশি হলে পরবর্তী গর্ভধারণেও ২ বারই টিকা দিতে হবে।
খ) গর্ভবতী মায়ের মানসিক যত্ন
👬শরীর ও মন পরস্পর সম্পর্কযুক্ত। মায়ের মনের তীব্র ক্ষোভ, উত্তেজনা মায়ের দেহে রাসায়নিক পরিবর্তন সৃষ্টি করে, যার প্রভাবে ভ্রণের হৃৎপিন্ডের ক্রিয়াসহ দেহের বিপাকক্রিয়া এবং শিশুর অস্থিরতা বৃদ্ধি পায়। মায়ের মানসিক অশান্তির কারণে সন্তানেরা পরিবেশের সাথে সহজে খাপ খাওয়াতে পারে না। তাই গর্ভবতী মা যাতে আনন্দ ও প্রফুল্ল চিত্তে থাকেন, সেদিকে সকলের চেষ্টা থাকা আবশ্যক। মন ভালো রাখার জন্য দরকার পরিবারের সকলের সাথে আন্তরিক সম্পর্ক রাখা,
👍ভালো ভালো বই পড়া,কোরআন পড়া, নামাজ পড়া
👍সব সময় ইতিবাচক চিন্তা করা, নেতিবাচক চিন্তা থেকে দূরে থাকা।
আশা করি আমাদের প্রত্যেকটি পোষ্ট আপনাদের ভালোলাগবে এবং উপকারে আসবে ।
ওজন কমাতে সাহায্য করবে এমন ৮টি অভ্যাস
মুখের কালো দাগ / মেজতার দাগ দূর করার সহজ উপায়।
হিট স্ট্রোক- কি ?এর কারণ, লক্ষণ ও এর প্রাথমিক চিকিৎসা ।
মুখের দূর্গন্ধ দূর করার ঘরোয়া উপায়
স্তন্য ক্যান্সার কি? কাদের হয়,লক্ষণ,কারণ এবং প্রতিকার।
মাইগ্রেন/Migraine কি? কারন,লক্ষণ/উপসর্গ এবং চিকিৎসা।
ডেঙ্গুজ্বর কী ? প্রকার,লক্ষণ, এবংচিকিৎসা।
ম্যালেরিয়া কী ? প্রকারভেদ,লক্ষণ, এবং চিকিৎসা।
সাইনোসাইটিস কী?লক্ষণ,করণীয় এবং চিকিৎসা।
নিউমোনিয়া কী?লক্ষণ এবং চিকিৎসা।
চিকনগুনিয়া কি?লক্ষণ,কিভাবে ছড়ায়,প্রতিরোধিএবং চিকিৎসা।
শীর্ষ ১০ ধরনের ক্যানসারের আক্রমন হয় বাংলাদেশে।
হুপিং কাশি/ Pertussis কী,লক্ষণ,জটিলতা, এবং চিকিৎসা।
মাম্প্স কী,লক্ষণ / উপসর্গ,মাম্প্স হলে কী কী করণীয়/ ( হোম রেমেডি) এবং চিকিৎসা।
Tonsillitis/টনসিলাইটিস কি? কারণ, লক্ষণ,কী খাওয়া যাবে/যাবে না এবং চিকিৎসা।
করোনাভাইরাসের (কোভিড-১৯) টিকার চতুর্থ ডোজ এবং করোনা মহামারির আতঙ্ক কমে গেলেও সংক্রমণ থেমে নেই।
স্বাস্থ্য ভালো রাখতে খাওয়ার পর যে কাজগুলো করবেন না ?
দুধ -আনারস একসাথে খেলে কি মানুষ মারা যায় ? জেনেনিন এর সঠিক উত্তর ।
পিরিয়ড চলাকালিন মেয়েরা যেসব কাজ থেকে বিরত থাকবেন ।
পর্যাপ্ত ঘুম না হলে ক্ষতি কী । এবং জেনে নিন ঘুম না হলে কী করবেন ?
রাতকানা রোগ কী ? রাতকানা রোগ কেন হয় ? এবং এর প্রতিকার ।
রক্তস্বল্পতা কি ? এর কারণ , লক্ষণ, চিহ্ন, চিকিৎসা এবং উপদেশ ?
কান পাকা রোগ কেন হয় এর কারণ,লক্ষণ,চিহ্ন এবং চিকিৎসা
কনজাংটিভাইটিস বা ( চোখ উঠা ) কি ? এর কারণ , লক্ষণ/চিহ্ন , চিকিৎসা এবং প্রতিরোধ ।
NOTE: সকল ঔষধ রেজিষ্টার্ড চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী সেবন করুন ।