বাংলাদেশের স্বাধীনতা দিবস, প্রেক্ষাপট, স্বাধীনতার ঘোষণা, এবং স্বাধীনতা দিবস উৎযাপন !

 বাংলাদেশের স্বাধীনতা দিবস, প্রেক্ষাপট, স্বাধীনতার ঘোষণা, এবং স্বাধীনতা দিবস উৎযাপন !

Any Help24


👉বাংলাদেশের স্বাধীনতা দিবস হিসেবে ২৬শে মার্চ পালিত হয় (বাংলাদেশের জাতীয় দিবস) ১৯৭১ সালের ২৫শে মার্চ রাতে (কাল রাত) তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের মানুষজন আনুষ্ঠানিকভাবে নিজেদের স্বাধীনতার সংগ্রাম শুরু করেন। ২৫শে মার্চ রাতে গ্রেফতার হওয়ার পূর্বে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের অবিসংবাদিত নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আনুষ্ঠানিকভাবে এক তার বার্তায় বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেন। ২৬ মার্চ শেখ মুজিবুর রহমানের পক্ষে এম এ হান্নান চট্টগ্রামের কালুরঘাট বেতার কেন্দ্র থেকে বাংলাদেশের আপামর জনসাধারণের উদ্দেশ্যে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বাধীনতাযুদ্ধে অংশগ্রহণের ঘোষণা পত্র পাঠ করেন। পরে ২৭ মার্চ জিয়াউর রহমান একই কেন্দ্র থেকে স্বাধীনতা ঘোষণা পাঠ করেন।



👉১৯৭২ সালের ২২ই জানুয়ারি প্রকাশিত একটি প্রজ্ঞাপনে এই দিনটিকে বাংলাদেশের জাতীয় দিবস হিসেবে পালন করা হয়।এবং এই দিন এ সরকারিভাবে সবকিছুর ছুটির ঘোষণা করা হয়।



 বাংলাদেশের প্রেক্ষাপট হলোঃ


👉১৯৭১ সালের ২৫ই মার্চ  ওই সময় পশ্চিম পাকিস্তানের সরকার গভীর রাতে পূর্ব পাকিস্তানের(অর্থাৎ বর্তমান বাংলাদেশ) নিরীহ মানুষের উপর হামলা শুরু করে। ঢাকার বিভিন্ন জায়গায় গোলাবর্ষণ করা হয়।এবং অনেক জায়গায় নারীদের উপরও অনেক নির্যাতন চালানো হয় এবং অনেক স্থানে পরিকল্পিতভাবে হত্যাকাণ্ড চালানো হয়। এমতাবস্থায় বাঙালিদের দেয়ালে পিঠ ঠেকে যাওয়ার অবস্থা সৃষ্টি হয় এবং অনেক স্থানেই আনুষ্ঠানিক ঘোষণার অপেক্ষা না করেই অনেকে যুদ্ধের প্রস্তুতি নিতে শুরু করেন। পরবর্তিতে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা পাবার পর আপামর বাঙালি জনতা পশ্চিম পাকিস্তানি জান্তার বিরুদ্ধে যুদ্ধে ঝাপিয়ে পড়ে এবং ভারতের অবিস্মরণীয় সমর্থনের ফলস্বরূপ দীর্ঘ ৯ মাস রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের মধ্যদিয়ে পূর্ব পাকিস্তান স্বাধীন করেন। 



স্বাধীনতার ঘোষণাঃ



👉১৯৭১ সালের ২৫ই মার্চ মধ্য রাতের সময় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর হাতে গ্রেপ্তার হন। গ্রেপ্তার হওয়ার একটু আগে ২৫শে মার্চ রাত ১২টার পর (২৬শে মার্চের প্রথম প্রহরে) শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষণাপত্রে স্বাক্ষর করেন। যা চট্টগ্রামে অবস্থিত তৎকালীন ই.পি.আর এর ট্রান্সমিটারে করে পাঠানো হয় প্রচারের জন্য। 



ঘোষণাটি নিম্নরুপ হলোঃ


👉এইটাই হয়তবা আমার শেষ বার্তা আজ থেকে বাংলাদেশ স্বাধীন। আমি বাংলাদেশের মানুষকে আহ্বান জানাচ্ছি যে আপনারা যেইখানেই থাকুন আপনাদের সবটা দিয়ে দখলদার সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে শেষ পর্যন্ত যুদ্ধ চালিয়ে যান। বাংলাদেশের মাটি থেকে সবশেষে পাকিস্তানি সৈন্যদেরকে উত্খাত করতে হবে এবং চূড়ান্ত বিজয় অর্জনের আগে পর্যন্ত আপনাদের যুদ্ধে অব্যাহত থাকুক।


 👉 ১৯৭১ সালে ২৬শে মার্চ বেলাল মোহাম্মদ এবং আবুল কাসেম সহ চট্টগ্রামের বেতার কেন্দ্রের কিছু কর্মী এবং স্থায়ী আওয়ামী লীগ নেতা এম.এ. হান্নান প্রথম শেখ মুজিব এর স্বাধীনতার ঘোষণা পত্রটি মাইকিং করে প্রচার করেন। পরে ২৭শে মার্চ তৎকালীন পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর বাঙালি অফিসার মেজর জিয়াউর রহমান চট্টগ্রামের কালুরঘাট বেতার কেন্দ্র থেকে স্বাধীনতা ঘোষণা করেন। ঘোষণাপত্রটির ভাষ্য। 



নিম্নরুপ হলোঃ


👉অনুবাদ: আমি,মেজর জিয়া, বাংলাদেশ লিবারেশন আর্মির প্রাদেশিক কমাণ্ডার-ইন-চিফ। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পক্ষ থেকে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করছি।



👉আমি আরো ঘোষণা করছি যে আমরা শেখ মুজিবুর রহমানের অধীনে একটি সার্বভৌম এবং আইনসিদ্ধ সরকার গঠন করেছি যা আইন এবং সংবিধান অনুযায়ী কর্মকাণ্ড চালিয়ে যেতে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। আন্তর্জাতিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে আমাদের সরকার জোট-নিরপেক্ষ নীতি মেনে চলতে বদ্ধপরিকর। এ রাষ্ট্র সকল জাতির সাথে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখবে এবং বিশ্বশান্তির জন্য প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখবে। আমি সকল দেশের সরকারকে তাদের নিজ নিজ দেশে বাংলাদেশের নৃশংস গণহত্যার বিরুদ্ধে জনবল গড়ে তোলার আহ্বান করছি।



👉১৯৭১ সালে ২৭ই মার্চের এই ঘোষণার মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের মাটিতে রক্তক্ষয়ী স্বাধীনতা যুদ্ধের সূচনা ঘটে  এবং যেই যুদ্ধ ৯ মাস পযন্ত স্থায়ী থাকে।



স্বাধীনতা দিবস উৎযাপনঃ



👉বাংলাদেশের স্বাধীনতা দিবস বেশ বর্ণাঢ্য ভাবে উদ্‌যাপন করা হয়। জাতীয় স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে উদ্‌যাপন শুরু হয়। ৩১ বার তোপধ্বনির মধ্য দিয়ে দিবসের শুভ সূচনা করা হয়। সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে সরকারি, আধা-সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত এবং ব্যক্তিমালিকানাধীন ভবনসমূহে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়। দিবসটি উপলক্ষে সকাল থেকে রাত পর্যন্ত শহরের প্রধান প্রধান সড়ক ও সড়কদ্বীপসমূহ জাতীয় পতাকা ও বিভিন্ন রঙের পতাকা দিয়ে সজ্জিত করা হয় এবং জাতীয় স্টেডিয়ামে  বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাত্র-ছাত্রীদের সমাবেশ. ডিসপ্লে. কুচকাওয়াজ. শরীরচর্চা প্রদর্শন করানো হয়ে থাকে।



👉এই দিনে বাংলাদেশের সব স্থানে সরকারি ছুটি থাকে।এবং পত্রিকাগুলো বিশেষ ক্রোড়পত্র বের করে। বেতার এবং টিভি চ্যানেলগুলোতে বিশেষ অনুষ্ঠান প্রচার করা হয়।



স্বাধীনতার ৫০ বছরঃ


👉২০২১ সালের ২৬শে মার্চ বাংলাদেশের স্বাধীনতার ৫০ বছরের সুবর্ণজয়ন্তী পালন করা হয়। 



স্বাধীনতা পুরস্কারঃ



👉স্বাধীনতার পুরস্কার বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক প্রদত্ত সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মাননা পদক বলা হয়। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের বীর শহীদদের স্মরণে ১৯৭৭ সাল থেকে প্রতি বছর বাংলাদেশের স্বাধীনতা দিবসে এই পদক প্রদান দেওয়া হয়। এই পুরস্কার জাতীয় জীবনে সরকার কর্তৃক নির্ধারিত বিভিন্ন ক্ষেত্রে গৌরবোজ্জ্বল ও কৃতিত্বপূর্ণ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ বাংলাদেশের নাগরিক এমন ব্যক্তি বা গোষ্ঠিকে প্রদান করা হয়ে থাকে।


আশা করি আমাদের প্রত্যেকটি পোষ্ট আপনাদের ভালোলাগবে এবং উপকারে আসবে ।

বিজ্ঞান থেকে আসা গুরুত্বপূর্ণ ৫০ টি প্রশ্ন/উত্তর

বাংলাদেশের সকল জাতীয় দিবস সমূহ

বাংলা ব্যাকরণ. ধ্বনিতত্ত্ব থেকে কিছু গুরত্বপূর্ণ প্রশ্ন/উত্তর

বাংলাদেশ স্বাস্থ্যসেবা সাধারন জ্ঞান

স্বামী স্ত্রীর রক্তের গ্রুপ এক হলে কি কোনো সমস্যা হয় ?

স্বাস্থ্য ভালো রাখতে খাওয়ার পর যে কাজগুলো করবেন না ?

দুধ -আনারস একসাথে খেলে কি মানুষ মারা যায় ? জেনেনিন এর সঠিক উত্তর ।

পিরিয়ড চলাকালিন মেয়েরা যেসব কাজ থেকে বিরত থাকবেন ।

পর্যাপ্ত ঘুম না হলে ক্ষতি কী । এবং জেনে নিন ঘুম না হলে কী করবেন ?