বারমুডা ট্রায়াঙ্গেল বা শয়তানের ত্রিভুজ
বারমুডা ট্রায়াঙ্গেল যা শয়তানের ত্রিভুজ নামেও পরিচিত, আটলান্টিক মহাসাগরের একটি বিশেষ অঞ্চল, যেখানে বেশ কিছু জাহাজ ও উড়োজাহাজ রহস্যজনকভাবে নিখোঁজ হওয়ার কথা বলা হয়। অনেকে মনে করেন ঐ সকল ঘটনার কারণ নিছক দুর্ঘটনা, যার কারণ হতে পারে প্রাকৃতিক দুর্যোগ অথবা চালকের অসাবধানতা। আবার চলতি উপকথা অনুসারে এসবের পেছনে দায়ী হল কোন অতিপ্রাকৃতিক শক্তির উপস্থিতি। তবে এ বিষয়ে পর্যাপ্ত তথ্য রয়েছে যে।
🚩দুর্ঘটনার
👌যে সকল দুর্ঘটনার উপর ভিত্তি করে বারমুডা ট্রায়াঙ্গেলকে চিহ্নিত করা হয়েছিল তার বেশ কিছু ভুল কিছু লেখক দ্বারা অতিরঞ্জিত হয়েছিল। এমনকি কিছু দুর্ঘটনার সাথে অন্যান্য অঞ্চলের দুর্ঘটনার কোন পার্থক্যই নেই । অন্যান্য লেখকের বর্ণনাতে বারমুডা ট্রায়াঙ্গেলের বিস্তৃতিতে অনেক ভিন্নতা আছে। ওই ত্রিভূজের উপর দিয়ে মেক্সিকো উপসাগর থেকে উষ্ণ সমুদ্র স্রোত বয়ে গিয়েছে । এই তীব্র গতির স্রোতই অধিকাংশ ধ্বংসের কারণ মূলত।
🚐যাতায়াত
👍এখানকার আবহাওয়া এমন যে হঠাৎ করে ঝড় ওঠে আবার থেমে যায়, গ্রীষ্মে ঘূর্ণিঝড় আঘাত হানে। বিংশ শতাব্দীতে টেলিযোগাযোগ, রাডার ও স্যাটেলাইট প্রযুক্তি পৌঁছানোর আগে এমন অঞ্চলে জাহাজডুবি খুব স্বাভাবিক একটি ঘটনা। এই অঞ্চল বিশ্বের ভারী বাণিজ্যিক জাহাজ চলাচলকারী পথগুলোর অন্যতম। জাহাজগুলো আমেরিকা, ইউরোপ ও ক্যারিবিয়ান দ্বীপপুঞ্জে যাতায়াত করে। এছাড়া এটি হল প্রচুর প্রমোদতরীর বিচরণ ক্ষেত্র। এ অঞ্চলের আকাশপথে বিভিন্ন রুটে বাণিজ্যিক ও ব্যক্তিগত বিমান চলাচল করে। ত্রিভূজের বিস্তৃতির বর্ণনায় বিভিন্ন লেখক বিভিন্ন মত দিয়েছেন। কেউ মনে করেন এর আকার ট্রাপিজয়েডের মত, যা ছড়িয়ে আছে ফ্লোরিডা, বাহামা এবং ক্যারিবিয়ান দ্বীপপুঞ্জ এবং ইশোর পূর্বদিকের আটলান্টিক অঞ্চল জুড়ে।
📣উপসাগর
⛵আবার কেউ কেউ এগুলোর সাথে মেক্সিকো উপসাগরকেও যুক্ত করেন। তবে লিখিত বর্ণনায় যে সাধারণ অঞ্চলের ছবি ফুটে ওঠে তাতে রয়েছে ফ্লোরিডার আটলান্টিক উপকূল, পুয়ের্তো রিকো, মধ্য আটলান্টিকে বারমুডার দ্বীপপুঞ্জ এবং বাহামা ও ফ্লোরিডা স্ট্রেইটস এর দক্ষিণ সীমানা যেখান ঘটেছে অধিকাংশ দূর্ঘটনা। বারমুডা ট্রায়াঙ্গেল বিষয়ে যারা লিখেছেন তাদের মতে ক্রিস্টোফার কলম্বাস সর্বপ্রথম এই ত্রিভুজ বিষয়ে অদ্ভুত অভিজ্ঞতার কথা লিখেন। তিনি লিখেছিলেন যে তার জাহাজের নাবিকেরা এ অঞ্চলের দিগন্তে আলোর নাচানাচি, আকাশে ধোঁয়া দেখেছেন। এছাড়া তিনি এখানে কম্পাসের উল্টাপাল্টা দিক নির্দেশনার কথাও বর্ণনা করেছেন।
⛛সর্বপ্রথম এ ত্রিভুজ
⛵তিনি ১১ই অক্টোবর, ১৪৯২ তে তিনার লগ বুকে লিখেন যে বর্তমানে বিশেষজ্ঞরা প্রকৃত লগবুক পরীক্ষা করার মাধ্যমে যে মত দিয়েছেন তার সারমর্ম হল নাবিকেরা সেখানে যে আলো দেখেছেন তা হল স্থানীয় জনগোষ্ঠীর ব্যবহৃত নৌকায় রান্নার কাজে ব্যবহৃত আগুন। আর কম্পাসে সমস্যা সৃষ্টি হয়েছিল নক্ষত্রের অবস্থান পরিবর্তনের কারণে। ১৯৫০ সালের ১৬ই সেপ্টেম্বর ই. ভি. ডব্লিউ জোন্স সর্বপ্রথম এ ত্রিভুজ নিয়ে খবরের কাগজে লিখেন।এর দু বছর পর ফেইট ম্যাগাজিনে জর্জ এক্স স্যান্ড সী মিস্ট্রি এট আওয়ার ব্যাক ডোর, শিরোনামে তিনি একটি ছোট প্রবন্ধ লিখেন। এ প্রবন্ধে সে ফ্লাইট নাইনটিন ( ইউ এস নেভীর পাঁচটি টি বি এম অ্যাভেন্জার, বিমানের একটি দল' যা প্রশিক্ষণ মিশনে গিয়ে নিখোঁজ হয়। এর নিরুদ্দেশের কাহিনী বর্ণনা করেন এবং তিনিই প্রথমে এই অপরিচিত ত্রিভূজাকার অঞ্চলের কথা সবার সামনের দিকে তুলে ধরেন।
👉১৯৬২ সাল
⛵১৯৬২ সালের এপ্রিল মাসে ফ্লাইট নাইনটিন নিয়ে আমেরিকান লিজান ম্যগাজিনে লিখা হয়। বলা হয়ে থাকে এই ফ্লাইটের দলপতি কে নাকি বলতে শোনা গিয়েছে We don't know where we are, the water is green, no white। এর অর্থ হল আমরা কোথায় আছি জানি না, সবুজ বর্ণের জল, কোথাও সাদা কিছু নেই । এতেই প্রথম ফ্লাইট নাইনটিনকে কোন অতিপ্রাকৃতিক ঘটনার সাথে যুক্ত করা হয়। এরপর ভিনসেন্ট গডিস প্রাণঘাতী বারমুডা ট্রায়াঙ্গেল নামে আর এক কাহিনী ফাঁদেন ১৯৬৪ সালের ফেব্রুয়ারিতে।
⛵এর উপর ভিত্তি করেই তিনি আরও বিস্তর বর্ণনা সহকারে লিখেন "ইনভিজিবল হরাইজনমানে “অদৃশ্য দিগন্ত নামের বই । আর ও অনেক লেখকেই নিজ নিজে মনের মাধুরীতে মিশিয়ে এ বিষয়ে বই লিখেন। তারা হলো জন ওয়ালেস স্পেন্সার তিনি লিখেন লিম্বো অফ দ্যা লস্ট 1969-1973 মানে বিস্মৃত অন্তর্ধান চার্লস বার্লিটজ লিখেন দি বারমুডা ট্রায়াঙ্গেল 1974 রিচার্ড উইনার লিখেন দ্যা ডেভিল'স ট্রায়াঙ্গেল শয়তানের ত্রিভূজ 1974. নামের বই, এছাড়া আরও অনেকেই লিখেছেন।
🚹উপস্থাপন
📀এরা সবাই ঘুরেফিরে একার্ট বর্ণিত অতিপ্রাকৃতিক ঘটানাই বিভিন্ন স্বাদে উপস্থাপন করেছেন। লরেন্স ডেভিড কুসচ হলো অ্যারিজোনা স্টেট ইউনিভার্সিটির রিসার্চ লাইব্রেরিয়ানদের এবং দ্যা বারমুডা ট্রায়াঙ্গেল মিস্ট্রি সলভড ১৯৭৫ এর লেখক। তার গবেষণায় তিনি চার্লস বার্লিটজ এর বর্ণনার সাথে প্রত্যক্ষ্যদর্শীদের বর্ণনার অসংগতি তুলে ধরে। যেমন' যথেষ্ট সাক্ষ্যপ্রমাণ থাকার পরেও বার্লিটজ বিখ্যাত ইয়টসম্যান ডোনাল্ড ক্রোহার্সট এর অন্তর্ধানকে বর্ণনা করেছেন রহস্য হিসেবে। আরও একটি উদাহরণ হল- আটলান্টিকের এক বন্দর থেকে ছেড়ে যাওয়ার তিন দিন পরে একটি আকরিকবাহী জাহাজের নিখোঁজ হবার কথা বার্লিটজ বর্ণনা করেছেন আবার অন্য এক স্থানে একই জাহাজের কথা বর্ণনা করে বলেছেন সেটি নাকি প্রশান্ত মহাসাগরের একটি বন্দর থেকে ছাড়ার পর নিখোঁজ হয়েছিল।
এছাড়াও কুসচ দেখান যে বর্ণিত দূর্ঘটনার একটি বড় অংশই ঘটেছে কথিত ত্রিভূজের সীমানার বাইরে। কুসচ এর গবেষণা ছিল খু্বই সাধারন। তিনি শুধু লেখকদের বর্ণনায় বিভিন্ন দূর্ঘটনার তারিখ সময় ইত্যাদি অনুযায়ী সে সময়ের খবরের কাগজ থেকে আবহাওয়ার খবর আর গুরুত্বপূর্ণ ঘটনাগুলো সংগ্রহ করেছেন যা গল্পে লেখকরা বলেননি। কুসচ এর গবেষণায় যা পাওয়া যায় তা হল।
👥নিখোঁজ
📐বারমুডা ট্রায়াঙ্গেলে যে পরিমাণে জাহাজ এবং উড়োজাহাজ নিখোঁজ হবার কথা বলা হয় কিন্তু তার পরিমাণে বিশ্বের অন্যান সমুদ্রের তুলনায় খিব বেশি না।
📐এ অঞ্চলে গ্রীষ্মমন্ডলীয় ঝড় নিয়মিত আঘাত হানে, যা জাহাজ ও উড়োজাহাজ নিখোঁজ হওয়ার অন্যতম কারণ। কিন্তু বার্লিটজ বা অন্য লেখকেরা এধরনের ঝড়ের কথা অনেকাংশেই এড়িয়ে গিয়েছেন।
📐অনেক ঘটনার বর্ণনাতে কল্পনার রং চড়িয়েছেন লেখকরা । আবার কোনো নৌকা নির্দিষ্ট সময়ের চাইতে দেরিতে বন্দরে ভিড়লে তাকেও নিখোঁজ বলে প্রচার করা হয়েছে।
📐আবার কখনোই ঘটেনি এমন অনেক ঘটনার কথা লেখকেরা বলেছেন। যেমন- ১৯৩৭ সালে ফ্লোরিডার ডেটোনা সমুদ্রতীরে। একটি বিমান দূর্ঘটনার কথা বলা হয়, কিন্তু সেসময়ের খবরের কাগজ থেকে এ বিষয়ে কোন তথ্যই পাওয়া যায়নি।
🆁 গবেষণার
📌সুতরাং কুসচ –এর গবেষণার উপসংহারে বলা যায়- লেখকরা অজ্ঞতার কারণে অথবা ইচ্ছাকৃত ভাবে বারমুডা ট্রায়াঙ্গেল নিয়ে বানোয়াট রহস্য তৈরি করেছেন। কন্টিনেন্টাল সেলভে জমে থাকা বিপুল পরিমাণ মিথেন হাইড্রেট অনেক জাহাজ ডোবার কারণ বলে দেখা গেছে। অস্ট্রেলিয়ায় পরীক্ষাগারের গবেষণায় দেখা গিয়েছে, বাতাসের বুদবুদ পানির ঘনত্ব কমিয়ে দেয়। তাই সাগরে যখন পর্যায়ক্রমিক মিথেন উদগীরন হয়, তখন পানির প্লবতা কোন কিছুকে ভাসিয়ে রাখার ক্ষমতা কমে । যদি এমন ঘটনা ওই এলাকায় ঘটে থাকে তাহলে সতর্ক হবার আগেই কোন জাহাজ দ্রুত ডুবে যাওয়ার সম্ভাবনা হতে পারে।
📌১৯৮১ সালে “ইউনাইটেড স্টেটস জিওলজিক্যাল সার্ভে” একটি রিপোর্ট প্রকাশ করে, যাতে বর্ণিত আছে যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ উপকূলের বিপরীতে ব্ল্যাক রিজএলাকায় মিথেন হাইড্রেট রয়েছে। আবার ইউএসজিএস(ইউনাইটেড স্টেটস জিওলজিক্যাল সার্ভে) এর ওয়েব পৃষ্ঠা থেকে জানা যায় গত ১৫০০ বছরের মধ্যে ওই এলাকায় তেমন হাইড্রেট গ্যাসের উদগীরন ঘটেনি, কম্পাসের ভুল দিক নির্দেশনা|
🌈কম্পাস
📌কম্পাসের পাঠ নিয়ে বিভ্রান্তি অনেকাংশে এই বারমুডা ট্রায়াঙ্গেলের কাহিনীর সাথে জড়িত। এটা মনে রাখা প্রয়োজন যে কম্পাস থেকে চুম্বক মেরুর দূরত্বের উপর ভিত্তি করে এর দিক নির্দেশনায় বিচ্যূতি আসে। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়- যুক্তরাষ্ট্রে শুধুমাত্র উইসকনসিন থেকে মেক্সিকোর উপসাগর। পর্যন্ত সরলরেখা বরাবর চৌম্বক উত্তর মেরু সঠিক ভাবে ভৌগোলিক উত্তর মেরু নির্দেশ করে। এই সাধারণ তথ্য যে কোন দক্ষ পথপ্রদর্শকের জানা থাকার কথা। কিন্তু সমস্যা হল সাধারণ মানুষকে নিয়ে, যারা এ বিষয়ে কিছুই জানে না।
📌ঐ ত্রিভুজ এলাকা জুড়ে কম্পাসের এমন বিচ্যূতি তাদের কাছে রহস্যময় মনে হয়। কিন্তু এটা খুবই স্বাভাবিক ঘটনাহারিকেন হল একটি শক্তিশালী ঝড়। ঐতিহাসিক ভাবেই জানা যায়।আটলান্টিক মহাসাগরে বিষুব রেখার কাছাকাছি অঞ্চলে শক্তিশালী হারিকেনের কারণে হাজার হাজার মানুষের প্রাণহানী ঘটেছে। আর ক্ষতি হয়েছিল কোটি কোটি টাকার। রেকর্ড অনুসারে ১৫২০ সালে স্প্যানিশ নৌবহর ফ্রান্সিসকো দ্য বোবাডিলা, এমনি একটি বিধ্বংসী হারিকেনের কবলে পড়ে ডুবে যায়।
🚣কাহিনীর সত্যতা
📌বারমুডা ট্রায়াঙ্গেলের কাহিনীর সাথে জড়িত অনেক ঘটনার জন্য এধরনের হারিকেনই দায়ী। গলফ স্ট্রিম হল মেক্সিকো উপসাগর থেকে স্ট্রেইটস অব ফ্লোরিডা হয়ে উত্তর আটলান্টিকের দিকে প্রবাহিত উষ্ঞ সমুদ্রস্রোত। একে বলা যায় মহা সমুদ্রের মাঝে এক নদী। নদীর স্রোতের মত গলফ স্ট্রিম ভাসমান বস্তু কে স্রোতের দিকে ভাসিয়ে নিতে পারে। যেমনি ঘটেছিল ১৯৬৭ সালের ২২ ডিসেম্বর উইচক্রাফট নামের একটি প্রমোদতরীতে। মিয়ামি তীর হতে এক মাইল দূরে এর ইঞ্জিনে সমস্যা দেখা দিলে তার নাবিকরা তাদের অবস্থান কোস্ট গার্ডকে জানায়। কিন্তু কোস্ট গার্ডরা তাদেরকে ঐ নির্দিষ্ট স্থানে পায়নি। মানব ঘটিত দূর্ঘটনা।
📌অনেক জাহাজ এবং বিমান নিখোঁজ হওয়ার ঘটনার তদন্তে দেখা গিয়েছে এর অধিকাংশই চালকের ভুলের কারণে দূর্ঘটনায় পতিত হয়েছে। মানুষের ভুল খুবই স্বাভাবিক ঘটনা। আর এমনি ভুলের কারণে দূর্ঘটনা বারমুডা ট্রায়াঙ্গেলেও ঘটেতে পারে। যেমন কোস্ট গার্ড ১৯৭২ সালে ভি.এ. ফগএর নিখোঁজ হবার কারণ হিসেবে বেনজিন এর পরিত্যাক্ত অংশ অপসারনের জন্য দক্ষ শ্রমিকের অভাবকে দায়ী করেছে। সম্ভবত ব্যবসায়ী হার্ভি কোনভার এর ইয়ট টি তার অসাবধানতার কারণেই নিখোঁজ হয়। অনেক নিখোঁজের ঘটনারই উপসংহারে পৌঁছানো যায়নি। কারণ অনুসন্ধানের জন্য তাদের কোন ধ্বংসাবশেষ উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি ইচ্ছাকৃত ভাবে যে সব ধ্বংসসাধিত হয়েছে।
আরো পড়ুনঃ টেস্টটিউব বেবি কি?
📌যুদ্ধের সময় অনেক জাহাজ শত্রু পক্ষের অতর্কিত আক্রমণে ডুবে গিয়ে থাকতে পারে বলে মনে করা হয়। এ কারণেও জাহাজ নিখোঁজ হতে পারে। তবে বিশ্বযুদ্ধের সময় বেশ কিছু জাহাজ যাদের মনে করা হয়। এমনি কারণে ডুবেছে তাদের উপর অনুসন্ধান করা হয়। তবে শত্রু পক্ষের নথিপত্র নির্দেশনার লগ বই ইত্যাদি পরীক্ষা করে তেমন কিছু প্রমাণ করা যায়নি। যেমন মনে করা হয় ১৯১৮ সালে ইউ. এস.এস. সাইক্লপস এবং ২য় বিশ্বযুদ্ধে এইটার সিস্টার শিপ প্রোটিয়াস ও নিরিয়াস কে জার্মান ডুবোজাহাজ ডুবিয়ে দিয়েছিলেন । কিন্তু পরবর্তীতে আবার জার্মান রেকর্ড থেকে তার কোনো সত্যতা প্রমাণ করা সম্ভব হয়নি ।
🏁জলদস্যুদ
📌আবার ধারণা করা যায় যে জলদস্যুদের আক্রমণে অনেক জাহাজ নিখোঁজ থাকতে পারে। ঐ সময়ে প্রশান্ত মহাসাগরের পশ্চিমাংশে এবং ভারত মহাসাগরের মালবাহী জাহাজ চুরি ঘটনা খুব সাধারণ ছিল। মাদক চোরাচালানকারীরা সুবিধা মত জাহাজ, নৌকা. ইত্যাদি চুরি করত। মাদক চোরাচালানের জন্য। ১৫৬০ থেকে ১৭৬০ পর্যন্ত ক্যারিবিয়ান অঞ্চল ছিল। জলদস্যুদের আখড়া। কুখ্যাত জলদস্যু এডওয়ার্ড টিচ এবং জেন ল্যাফিট্টি ছিল ঐ অঞ্চলের বিভীষিকা। তবে শোনা গেছে যে ল্যাফিট্টি- ই সম্ভবত বারমুডা ট্রায়াঙ্গেলে শিকার হয়েছিল।
📌আর এক ধরনের দস্যুতার কথা শোনা যায়। যা পরিচলিত হত স্থল থেকে। এধরনের দস্যুরা সমুদ্র ধারে রাতে আলো জ্বালিয়ে জাহাজের নাবিকদের বিভ্রান্ত করত। নাবিকরা ওই আলোকে বাতি ঘরের আলো মনে করে সেদিকে অগ্রসর হতেন । তখন জাহাজগুলো ডুবো পাহাড়ের সাথে সংঘর্ষে হয়ে ডুবে যেত। এবং তারপরে ডোবা জাহাজের মালপত্র তীরের দিকে ভেসে এলে দস্যুরা ওইসব মালপএ সংগ্রহ করতেন । হয়তো ডুবন্ত জাহাজে কোন নাবিক বেঁচে থাকলে দস্যুরা তাদেরকেও হত্যা করে ফেলতেন ।
✈ফ্লাইট ১৯-৫টি টিভিএম আভেঞ্জার
📌ফ্লাইট ১৯-৫টি টিভিএম আভেঞ্জার টর্পেডো বোমারু বিমানের একটি। যেটি প্রশিক্ষণ চলাকালে ১৯৪৫ সালের ৫ ডিসেম্বর আটলান্টিক মহাসাগরে নিখোঁজ হয়। বিমানবাহিনীর ফ্লাইট পরিকল্পনা ছিল ফোর্ট লডারদেল থেকে ১৪৫ মাইল পূর্বে ও ৭৩ মাইল উত্তরে গিয়ে ১৪০ মাইল ফিরে এসে প্রশিক্ষণ শেষ করবে কিন্তু বিমানটি আর কখনো ফিরে আসেনি। নেভি তদন্তকারীরা নেভিগেশন ভুলের জন্যে বিমানের জ্বালানীশূন্যতার কারনে বিমান নিখোঁজের কারণ বলে চিহ্নিত করা হয়েছিল ।
📌বিমানটি অনুসন্ধান এবং উদ্ধারের জন্য পাঠানো বিমানের মধ্যে একটি বিমান পিবিএম ম্যারিনার ১৩ জন ক্রুসহ নিখোঁজ হয়। ফ্লোরিডা উপকূল থাকা একটি ট্যাঙ্কার একটি বিস্ফোরণ দেখার রিপোর্ট করে ব্যাপক তেল দেখার কথা বলে কিন্তু উদ্ধার অভিযানে এর সত্যতা পাওয়া যায়নি। দুর্ঘটনা শেষে আবহাওয়া দুর্যোগপূর্ণ হয়ে উঠে। সূত্র মতে সমসাময়িক কালে বাষ্প লিকের কারণে পুরো জ্বালানী ভর্তি অবস্থায় বিস্ফোরণ ঘটার ইতিহাস ছিল। ইউ এস এস সাইক্লপস
⛵যুক্তরাষ্ট্রের নৌ ইতিহাস
📌যুক্তরাষ্ট্রের নৌ ইতিহাসের সবচেয়ে মারাত্মক যুদ্ধ ছাড়া ক্ষতি হয়েছিল ইউ. এস.এস.সাইক্লপস নিখোঁজ হয়ে যাওয়া। অতিরিক্ত ম্যাঙ্গানিজ আকরিক ভর্তি বিমানটি ১৯১৮ সালের ৪ মার্চ বার্বাডোস দ্বীপ থেকে উড্ডয়নের পরে একটি ইঞ্জিন বিকল হয়ে যায় এবং ৩০৯ জন ক্রুসহ নিখোঁজ হয়ে যায় । যদিও তেমন কোন শক্ত প্রমাণ পাওয়া যায়নি তবুও নানা ধরনের ঘটনা শোনা যায়। কারো মতে ঝড় দায়ী আবার কারো মত ডুবে গেছে আবার কেউ কেউ এই ক্ষতির জন্য শত্রুপক্ষকে দায়ী করেন ।
📌উপরন্তু সাইক্লপস এর মত আর দুইটি ছোট জাহাজ প্রোটিউস এবং নেরেউস দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধকালীন সময়ে উত্তর আটলান্টিক মহাসাগরে নিখোঁজ হয়। সাইক্লপসের মত এই জাহাজদুটিতেও অতিরিক্ত আকরিকে ভর্তি ছিল। তিনটি ক্ষেত্রেই অতিরিক্ত মালামাল ধারণে অক্ষমতার ডিজাইনগত কারণেই জাহাজডুবি হয় বলেই ব্যাপক ধারণা করা হয়।
🍟২৮ ডিসেম্বর ১৯৪৮
✋২৮ ডিসেম্বর ১৯৪৮ সালে একটি ডগলাস ডিসি ৩ ফ্লাইট নাম্বার NC16002, সান জুয়ান -পুয়ের্তো রিকো থেকে মিয়ামি যাওয়ার পথে নিখোঁজ হয়। বিমান থাকা ৩২ জনসহ বিমানটির কোন হদিস পাওয়া যায়নি। সিভিল এরোনটিক্স বোর্ড তদন্ত নথিপত্র থেকে বিমানটি নিখোঁজ হওয়ার সম্ভাব্য একটি কারণ পাওয়া যায়। সেটি হল বিমানের ব্যাটারি ঠিকমত চার্জ না করে পাইলট সান জুয়ান থেকে রওনা দেয়। কিন্তু এটা সত্যি কিনা তা জানা যায়নি।
আশা করি আমদের প্রত্যেকটা পোষ্ট আপনাদের উপকারে আসবে ।
ইলেকট্রনিকস পাসপোর্টের (ই-পাসপোর্ট) কি?
টেস্টটিউব বেবি কি? বাংলাদেশে টেস্টটিউব বেবি জন্ম।
Chat GPT কী ? কীভাবে কাজ করে চ্যাট জিপিটি ?
ইন্টারনেট ছাড়াই চলবে হোয়াটসঅ্যাপ।
টেলিফোন আবিষ্কারের ইতিহাস এবংউদ্ভাবন ও এর বিকাশ।
টেলিগ্রাম বা টেলিগ্রাম অ্যাপ কি এবং এর ইতিহাস এবং সুবিধা ও অসুবিধা।
ল্যাপটপ কম্পিউটার কি? ল্যাপটপ কম্পিউটার ইতিহাস।
পৃথিবীর মায়া কাটিয়ে ওপারে পাড়ি দিলেন ফুটবলের রাজা পেলে
বাংলাদেশ ক্রিকেট এবং ফুটবল সম্পর্কীত গুরুত্বপূর্ণ কিছু প্রশ্ন উত্তর
পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের রাকাত সংখ্যা ও নিয়ম ।
জেনে নিন, দুধ -আনারস একসাথে খেলে কি মানুষ মারা যায় ? জেনেনিন এর সঠিক উত্তর ।
বাংলাদেশ স্বাস্থ্যসেবা সাধারন জ্ঞান,
বাংলাদেশের সকল জাতীয় দিবস সমূহ ।