বাংলাদেশে কাবাডি/হা-ডু-ডু খেলার ইতিহাস ও নিয়ম কানুন ।

 বাংলাদেশে কাবাডি খেলার ইতিহাস ও নিয়ম কানুন 

Any Help24



আমাদের দেশে কাবাডি অত্যন্ত জনপ্রিয় একটি খেলা। এই খেলাটি বিশেষ করে গ্রামাঞ্ছলে অনেক বেশি জনপ্রিয় হওয়ায় একে গ্রাম বাংলার খেলাও বলা হয়। কোন কোন স্থানে এই কাবাডি খেলাকে আবার হা-ডু-ডু খেলাও বলা হয়। তবে এই খেলা অত্যন্ত জনপ্রিয় হলেও হা-ডু-ডু খেলার কোন সঠিক নিয়ম কানুন না থাকায় বিভিন্ন স্থানে বিভিন্ন নিয়মে অনুষ্ঠিত হতো।


স্বাধীনতা পর


স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে হা-ডু-ডু খেলাকে ’কাবাডি’ নামকরণ করা হয় এবং এই খেলাকে জাতীয় খেলার গৌরব জনক মর্যাদা দেয়া হয়। ১৯৭৩ সালে বাংলাদেশ এ্যামোচার কাবাডি ফেডারেশন গঠিত হয়। এই ফেডারেশন কাবাডি খেলার উন্নয়নের জন্য সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালাতে থাকেন । কাবাডি ফেডারেশন কাবাডি খেলার বিভিন্ন নিয়ম-কানুন তৈরি করে। ১৯৭৪ সালে ভারতের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ প্রথম কাবাডি টেষ্ট খেলেন । 

আন্তজার্তিক পর্যায়ে এটিই ছিল প্রথম ম্যাচ। ১৯৭৮ সালে ভারতের মধ্য প্রদেশের লৌহ নগরী ভিলাইতে বাংলাদেশ, ভারত ও নেপালের প্রতিনিধিগণে এক বৈঠকে এশিয়ান এ্যামেচর কাবাডি ফেডারেশন গঠন করা হয়। বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন সাবেক সভাপতি মরহুম আবুল হাসনাত (বাংলাদেশ এ্যামেচার কাবাডি ফেডারেশন) ।


১৯৭৯ সাল


৯৭৯ সালে ভারতে বাংলাদেশ বনাম ভারত ফিরতি কাবাডি টেষ্ট খেলে এবং ১৯৮০ সালে সফলভাবে প্রথম এশীয় কাবাডি প্রতিযোগীতা এই খেলাকে সুপ্রতিষ্ঠিত করে। পরবর্তীতে সাফ গেমসও কাবাডি অন্তভুর্ক্ত করা হলে এ খেলার চূড়ান্ত বিজয় অর্জিত হয়। বর্তমানে কাবাডি জনপ্রিয়তার অনেক গুলি সিড়িঁ পার দিয়ে এগিয়ে চলছে আপন গতিতে। বিশেষ করে কাবাডি বাংলাদেশের জাতীয় খেলা হওয়ায় এর গুরুত্ব বেড়েছে অনেক বেশি। 

Any Help24



চলুন এবার জেনে আসি কাবাডি খেলার নিয়ম কানুন:


১.

খেলা শুরুর আগে দু’দলের অধিনায়কের উপস্থিতিতে রেফারি কয়েন দ্বারা টস করবেন। টস জয়ী অধিনায়ক কোর্ট পছন্দ বা বিপক্ষের কোর্টে রেইড করার যে কোন একটিবেছে নেবেন। খেলার দ্বিতীয়ার্ধে কোর্ট বদল হবে এবং যে দল প্রথমে রেইড করে নাই তারা রেইড করার সুযোগ পাবে। প্রথমার্থে খেলা শেষে উভয় দলের যে একজন খেলোয়াড় বেঁচেছিল কেবল তারাই খেলায় অংশ নেবে। অর্থাৎ যারা আউট হয়ে বসেছিল তারা আউট খেলোয়াড় হিসেবে বসে থাকবে।


২.

 কোন খেলোয়াড় মাঠের বাউন্ডারির বাইরের ভূমি স্পর্শ করলে তাকে ’আউট’ বলে গণ্য করা হবে। কিন্তু ষ্ট্রগলের সময় কোর্টেও বাইরের ভূমি স্পর্শ করলেও যদি তার শরীরের কোন অংশ সরাসরি সীমানার মধ্যে অবস্থিত কোন খেলোয়াড়কে বা ভূমি স্পর্শ করে তবে তিনি আউট  বলে গ্রণ্য হবে না।


৩.

 খেলা চলাকালে কোন এ্যান্ট্রি সীমানার বইরে চলে গেলে তিনি আউট হবেন। রেফারি বা আম্পায়ার তাকে তখনি কোর্টের বাইরে যেতে নির্দেশ দেবেন এবং জোরে তার নম্বর উচ্চারণ করে তাকে আউট ঘোষণা করবেন। তখন রেইড চলতে থাকলে এজন্য তিনি কোন বাশিঁ বাজাবেন না।


৪. 

রেইড চলাকালে যদি কোন এ্যান্ট্রির শরীরের কোন অংশ কোর্টের বাইরের ভূমি স্পর্শ করে বা বাইরে চলে যায় এবং তিনি রেইডারকে ধরে ফেলেন তবে রেইডার আউট হবেন না। কোর্টের বাইরে চলে যাবার ফলে ঐ এ্যান্ট্রি আউট হবেন।


৫.

 ষ্ট্রাগল শুরু হলে উভয় দিকের লবি খেলার মাঠের অন্তর্ভুক্ত অংশ হিসেবে গণ্য হবে। ষ্ট্রাগল শেষ হবার পর ষ্ট্রাগলে জড়িত খেলোয়াড়গণ নিজের কোর্টে প্রবেশের জন্য লবি ব্যবহার করতে পারেন।


৬. 

রেইডার ’কাবাডি’ শব্দ জোরে উচ্চারণ করে ক্যান্ট দেবেন। যদি কাবাডি শব্দ উচ্চারণ না করে ক্যান্ট বা ডাক দেন তবে রেফারি তাকে নিজেরকোর্টে পাঠিয়ে সতর্ক করে দেবেন এবং বিপক্ষকে রেইড করার সুযোগ দেবেন। এমতাবস্থায় ফেরৎ যাওয়া রেইডারকে এ্যান্ট্রি দল তাড়া করতে পারবে না।


৭. 

রেইডার বিপক্ষের কোর্ট স্পর্শ করার আগেই ক্যান্ট বা ডাক আরম্ভ করবেন। যদি ক্যান্ট বিলম্বে শুরু করে তবে রেফারি বা আম্পায়ার রেইডারকে নিজ কোর্টে ফেরৎ পাঠাবেন এবং সতর্ক করে দেবেন। এর ফলে বিপক্ষকে রেইড করার সুযোগ দেয়া হবে। এ অবস্থায়ও বিপক্ষ দল রেইডারকে তাড়া করতে পারবে না।


৮. 

কোন রেইডারকে সতর্ক করে দেয়ার পরও যদি তিনি উল্লেখিত ৬ ও ৮ নং নিয়ম ভঙ্গ করেন তবে রেফারি বা আম্পায়ার বিপক্ষকে একটি পয়েন্ট দেবেন। তবে আইন অমান্যকারী রেইডার আউট হবেন না।


৯. 

রেইডার বিপক্ষের কোর্ট পরপর তিনবার রেইড করবেন। পরপর তিনবার রেইড করার পরও যদি রেইডার কোন পয়েন্ট লাভ করতে না পারেন তবে বিপক্ষ একটি পয়েন্ট পাবে। ব্যার্থ রেইডের জন্য আম্পায়ার এই পয়েন্ট ঘোষনা করবেন এবং স্কোরশীটে চিহ্ন দিয়ে ধারাবাহিক ফলাফল রক্ষা করবেন। লোনা, বিরতির পর বা অতিরিক্ত সময়ের খেলায় এই ব্যর্থ রেইড গণ্য হবে না।


১০. 

একজন রেইডার নিরাপদে কোর্টে ফেরার পর অথবা বিপক্ষের কোর্টে ধরা পড়ে আউট হলে বিপক্ষ দল সেকেন্ডের মধ্যে রেইড করবে। এভাবে খেলা শেষ না হওয়া পর্যন্ত রেইড চলতে থাকবে।

আরো পড়ুনঃ ফুটবল খেলার ইতিহাস

১১.

যদি কোন রেইডার এ্যান্ট্রি দ্বারা ধরা পড়ে ষ্ট্রাগল করার পর নিজের কোর্টে নিরাপদে ফিরে আসতে পারে তবে বিপক্ষ দল তাড়া করতে পারবে না।


১২.

বিপক্ষের কোর্টে একসাথে একজন রেইডার রেইড করবেন। কখনোই একজনের অধিক হবে না। যদি একাধিক রেইডার একসাথে রেইড করে তবে রেফারি তাদের সকলকে নিজের কোর্র্টে ফেরৎ পাঠাবেন এবং এ কারণে তাদের রেইড কারা সুযোগ বাতিল করে বিপক্ষকে রেইড করার সুযোগ দেবেন। এ অবস্থায় রেইডারগণ কোন এ্যান্ট্রিকে ছুঁয়ে দিলে তা কার্যকরী হবে না। এ সময় রেইডারকে তাড়া করা যাবে না।


১৩.

 একসাথে একাধিক রেইডার বিপক্ষের কোর্টে হানা দিলে রেফারি সতর্ক করে দেবেন। সতর্ক করার পরও এ ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটলে রেফারি রেইডার কে সতর্ক করবে এবং প্রথম প্রবেশকারী রেইডার ছাড়া বাকি সবাইকে ’আউট’ বলে ঘোষনা করবেন। 


১৪. 

বিপক্ষের কোর্টে হানা দেয়ার সময় কোন রেইডার ক্যান্ট বা ডাক বন্ধ করলে তিনি আউট হবেন।

১৫.

 রেইডার এ্যান্টির কোর্টে ধরা পড়লে এ্যান্টিগণ রেইডারকে অবৈধভাবে (নাক মুখ আটকিয়ে আহত হতে পারে এমন কৌশল অবলম্বন করে অথবা অন্যভাবে) আটকাতে পারবে না। এমন করলে রেইডার আউট হবে না বরং এ্যান্টিকে সতর্ক করে দেবেন।


১৬. 

কোন রেইডার কোন এ্যান্টিকে অথবা কোন এ্যান্টি কোন রেইডারকে ইচ্ছাকৃতভাবে ধাক্কা দিয়ে কোর্টেও বাইরে ফেলে দিতে পারবে না। এমনি করলে রেফারি উক্ত খেলোয়াড়কে ’আউট’ ঘোষনা করবেন।


১৭. 

রেইডারের সফল হানা শেষে মধ্য রেখা পার হয়ে নিজের কোর্টে না ফেরা পর্যন্ত যদি কোন এ্যান্টি রেইডারের কোর্টে হানা দেয়ার জন্য মধ্য রেখা পার হয়ে বিপক্ষের কোর্টের ভূমি স্পর্শ করেন তবে তিনি আউট হন এবং তিনি যদি কোন রাইডারকে নিজের কোর্টে ধরে রাখতে সাহায্য করেন বা ধরেন তবে সেই রেইডার আউট হবেন না বরং যে এ্যান্ট্রি রেইডার সে আউট হবেন।


১৮. 

নিজের পালা ছাড়া কোন রেইডার রেইডার করতে গেলে রেফারি তাকে ফেরৎ পাঠাবেন এবং সতর্ক করে দেবেন। রেইডার পক্ষ একবার সতর্কিত হবার পরও যদি ইচ্ছাকৃত দ্বিতীয়বার এ রকম অপরাধ করে তবে রেফারি বিপক্ষ দলকে ১টি পয়েন্ট দিতে পারে।


১৯.

 ১টি দল যখন বিপক্ষ দলের সব খেলোয়ড়কে আউট করতে পারবে তখন ১টি লোনা পাবে। এই লোনার দুই পয়েন্ট অতিরিক্ত হিসেবে ঐ দলের মোট পয়েন্টের সাথে যুক্ত হবে। লোনার পর পুনরায় খেলা শুরু হবে এবং সকল খেলোয়াড় ১০ সেকেন্ডের মধ্যে কোর্টে প্রবেশ করবে। যে দল কোর্টে প্রবেশ করতে দেরি করবে রেফারি তার বিপক্ষ দলকে ১টি পয়েন্ট দান করবেন। এরপরও কোর্টে আসতে দেরি করলে রেফারি প্রতি ৫ মিনিট অন্তর বিপক্ষ দলকে ১টি করে পয়েন্ট দিতে থাকবেন খেলার শেষ সময় পর্যন্ত।


২০. 

রেইডারের বিপক্ষ কোর্টে বিপজ্জনকভাবে খেলা বা নিজ দলের নির্দেশ মোতাবেক খেলার জন্য রেফারি রেইডারকে সকর্ত করে দেবেন। এর পুনরাবৃত্তি ঘটলে বিপক্ষকে একটি পয়েন্ট প্রদান করবেন।


২১. 

একজন রেইডারের শরীর বা ধর ছাড়া অন্য কোথাও ধরা যাবে না। এই নিয়মের ব্যাতিক্রম যিনি করবেন তিনি আউট হবেন। রেইডারকে ইচ্ছাকৃত বা ন্যায়ভাবে ধরা না হয় তবে আউট হবেন না।


২২. 

খেলা চলাকালে কোন পক্ষের একজন বা দুইজন খেলোয়াড় অবশিষ্ট থাকে এবং অধিনায়ক যদি তাদেরকে আউট ঘোষণা করতে চান এবং পুরো দলকে কোর্টে নামাতে চান তবে বিপক্ষ দল আউট ঘোষণাকৃত খেলোয়াড়দের পয়েন্টসহ একটি লোনা পাবে।


২৩.

 খেলোয়াড়গণ যে সিরিয়াল অনুসারে আউট হবে আবার সেই সিরিয়াল অনুসারে বিপক্ষের খেলোয়াড়দের আউট হবার পরিবর্তে কোর্টে প্রবেশ করবে।


আশা করি আমদের প্রত্যেকটা পোষ্ট আপনাদের উপকারে আসবে ।  

ফুটবল খেলার ইতিহাস ।

বাংলাদেশ ক্রিকেট এবং ফুটবল সম্পর্কীত গুরুত্বপূর্ণ কিছু প্রশ্ন উত্তর

পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের রাকাত সংখ্যা ও নিয়ম ।

জেনে নিন, দুধ -আনারস একসাথে খেলে কি মানুষ মারা যায় ? জেনেনিন এর সঠিক উত্তর ।

আরো বিভিন্ন বিষয় পড়ুন ।

বাংলাদেশ স্বাস্থ্যসেবা সাধারন জ্ঞান, 

ডিপ্লোমা ইন মিডওয়াইফারি কোর্সে ভর্তি পরিক্ষায় আসা (বাংলা) নৈবেতীক ২০১৮ -২০১৯ । 

বাংলাদেশের সকল জাতীয় দিবস সমূহ ।

বাংলা যুক্তবর্ণ

Sentence কাকে বলে ও কত প্রকার । জানুন একদম সহজ ভাবে ।

বাংলা একাডেমির সর্বশেষ বানানের নিয়ম অনুসারে কিছু শুদ্ধ ।

বিভিন্ন বিসিএস এবং বিভিন্ন প্রতিযোগিতামূলক পরিক্ষায় আসা বাংলাদেশ স্বাস্থ্যসেবা সাধারন জ্ঞান, কিছু প্রশ্ন এবং উত্তর ।

কিডনি সম্পর্কিত কিছু কথা ।