কোষ্ট্য কাঠিন্য/ (Constipation) কী,লক্ষণ ও উপসর্গ,রোগ নির্ণয়,জটিলতা, এবং চিকিৎসা।

 কোষ্ট্য কাঠিন্য/ (Constipation) কী?

Any Help24

 কোষ্ট্য কাঠিন্য/ (Constipation):-

কোষ্ট্য কাঠিন্য বলতে আমরা সাধারণত অর্শ্ব ব্যারাম বা কষা ব্যারাম বলে থাকি। ইহা সাধারণত, এক-দুই দিন পরপর মলত্যাগের বেগ  না  হওয়া এবং শুষ্ক ও কঠিন মল নিষ্কাশন হওয়াকে বুঝায়। এটি একটি অস্বাভাবিক শারীরিক অবস্থা যখন একজন ব্যক্তি সহজে মলত্যাগ করতে সক্ষম হন না। ডাক্তারদের মতে কেউ যদি পর্যাপ্ত পরিমাণ আঁশযুক্ত খাবার গ্রহণ করার পরও প্রতি  দিন  এক থেকে  তিন বারের কম পায়খানায় যায় তখনই এই অবস্থাকে কোষ্ঠকাঠিন্য বলা হয়। এ অবস্থায় পায়খানায় দীর্ঘ সময় বসে থাকলেও মল পরিষ্কার হয় না।

 

জেনে রাথা ভালোঃ-

১. একজন সাধারণ ব্যক্তি সাধারণ ২০০-৩০০ গ্রাম মল ত্যাগ করে থাকে। তবে এটি তার মলের পরিমাণ তার খাবার এর পরিমাণের উপর নির্ভর করে।

২. একজন ব্যক্তি সাধারণ ১/২ বার মল ত্যাগ করে থাকে । আবার অনেক সময় ৩/৪ বার ও হয়ে থাকে।

এটি স্বাভাবিক প্রক্রিয়া। যার এই প্রক্রিয়া স্বাভাবিক নয় তারা ১/২/৩ দিন পায়খানা বন্ধ থাকে বা কম পরিমাণে থাকে এবং শক্ত হয়। এ সময় পায়থানার ধরণ লম্বাটে বা গোটা গোটা ও হয়ে থাকে।


এবার চলুন Constipation এর কারণ গুলো জেনে নেয়া যাকঃ-

১. Peristalsis (পেরিস্টালাইসিস)  হলে অন্ননালী হতে পাকস্থলিতে প্রবেশ প্রক্রিয়ায় নালিগত্রের সংকোচন  ও প্রসারণ হবা পদ্ধতি বুঝায়।

২. খাদ্য পরিবর্তন, আশঁযুক্ত খাবার কম খাওয়া, পানি কম হওয়া, তেল-মসলা যুক্ত খাবার খাওয়া।

৩. খাবার হজম না হওয়া।

৪. গর্ভাবস্থায় সাধারণত কোষ্ট্য কাঠিন্য।

৫. Rectum ও Colon এর কারণে।

৬. মানসিক স্বতংক্রিয়া স্নায়ুতন্ত্রে পরিবর্তনে কারণে।

৭. মলের বেগ আসে কিন্তু ইচ্ছা করেই বার বার আটকে রাখা।

৮. বড় কোনো আপারেশনের কারণে।

৯. পেটের রোগ এর কারণে বেসি, বৃহৃদন্ত্রের ক্যান্সার পাইলোরাস আউটলেট ইত্যাদি।

১০. Anal Fissure অর্শ্ব মলাশয়ে প্রদাহ ইত্যাদি কারণে।

১১. পরফাইরিয়া, দুশচিন্তা Depression ইত্যাদি কারণে ও হতে পারে।

১২. শারীরিক পরিশ্রম না করা বা অলস্যপূর্ণ জীবন যাপন করা

১৩. জোলাপ জাতীয় ঔষধ সেবন এনিম নিতে থাকা।


লক্ষণ ও উপসর্গঃ-

কোষ্ট্য কাঠিন্য এর লক্ষণ ও উপসর্গ তিনটি কারণের উপর নির্ভর করে।

১। Rectum ও Colon প্রসারণ।

২। বেশি মাত্রায় জোলাপ জাতীয় ঔষধ খাওয়া।

৩। Colonic neurosis (নিউরোসিস) ।


১। Rectum ও Colon প্রসারণ এর লক্ষণ ও উপসর্গঃ-

ক) শরীর ভেঙ্গে পড়া।

খ) খিদে না পাওয়া,মাথা ঘোরা।

গ) মাথা ভারী মনে হওয়া।

ঘ) বমি-বমি ভাব।

ঙ) টক ঢেকুর ওঠা।

চ) মলদ্বার দিয়ে বায়ু নিগত হওয়া।

ছ) কোন কাজে মন না লাগা।

জ) জিভ ফাটা বা ফাটা সাদা হওয়া।

ঝ) পেট ভার বোধ, সব সময় মানসিক চাপ।


২। বেশি মাত্রায় জোলাপ জাতীয় ঔষধ খাওয়া।

এর ফলে জল/ পানি এবং সোডিয়াম, পটাসিয়ামও অন্যান্য ইলেকট্রোলাইট এর অভাব সৃষ্টি হয় এবং মাংশপেশি গুলি দূর্বল হয়ে পরে।


৩। Colonic neurosis (নিউরোসিস):- 

 এই ধরণটি প্রধানত বাচ্চাদের মধ্যে কোষ্ট্য কাঠিন্যের দেখা যায়। বাচ্চাদের খুব বেশি শাসন করলে তারা উদ্বিগ্নতায় ভুগে থাকে। অনেক সময় বাচ্চার সকাল সকাল পায়খানা করে না। তাদের Enema জাতীয় ঔষধ প্রয়োগ করা।


রোগ নির্ণয়ঃ-

১। খাওয়া দাওয়ার খুটি নাটি জানতে হবে।

২। অপারেশনের কথা জানতে হবে এবং রোগীর ঔষধ সম্পর্কে জানতে হবে।

৩। Proctoscopy (প্রক্টোস্কোপি) করতে হবে।

৪। P/R করা (Per Rectum)।

৫। Sigmoidoscopy(সিকমাইডোসকপি)।

৬। Barium Enema(বেরিয়াম এনিমা)।


জটিলতাঃ-

১। Rectal Prolose (রেক্টাল পুরোলসি)

২। Inguinal Hernia (ইনগুয়েনাল হার্নিয়া)

৩। Myocardial Infarction ( মাইকোকারডিয়াম ইনফ্যাকশন )

৪। Colon (কোলন)


চিকিৎসা:-

যতদূর সম্ভব প্রাকৃতিক ভাবে ঘরোয়া চিকিৎসা করতে হবে। নিম্নে আমরা এই পদ্ধতি নিয়ে আলোচনা করব।

Any Help24


১। প্রথমত,তরল পদার্থের সেবনঃ প্রচুর পরিমাণে পানি পান করতে হবে, তার কারণে পানি প্রয়োজন হবার পর অবশিষ্ট পানি খাদ্য হজম করতে সহযোগীতা করে। তাই একজন ব্যক্তি দৈনিক ১০/১২ গ্লাস পানি পান করতে হবে।

২। দ্বিতীয়ত, খাদ্যাভাস পরিবর্তনঃ- রোগীকে প্রচুর আশঁযুক্ত খাদ্যদ্রব্য( যেমনঃ তাজা সবুজ শাক সবজি, গাজর,মুলো, টমোটো, ফল স্যালাড ইত্যাদি) খেতে হবে। তবে তেল ও মসলা খাওয়া বন্ধ করতে হবে। তবে মৌসুমী সবজি সবচেয়ে বেশি খেতে হবে।


Any Help24

৩। ব্যায়ামঃ নিয়মিত ভাবে ব্যায়াম করতে হবে পেটের খাবার যেন ভালোভাবে হজম হয়  । খাবার পর পর বিশ্রাম নেওয়া ও ঠিক নয়। পেটে মালিশও করা যেতে পারে।


৪। জলাকর্ষী কালোয়েডস্  জাতীয় পদার্থ অন্ত্রে পানি শোষণ করে ফুলে। ওঠে আর অন্ত্রে চাপ সৃষ্টি করে  ক্রমস্কোচ বাড়িয়ে দেয়। আর যথেষ্ট পানি পান করতে হবে এর সাথে ইসুবগুলের ভুষি তুকমা দানা ইত্যাদি।


ওষুধের প্রয়োগঃ

1. Aluminium Hydroxide + Magnesium Hydroxide, Bisacodyl, Lactulose Magnesium, Sulphate, Inj. Mineral Oil 

ইত্যাদি গ্রুপের ওষুধ যে কোন একটি গ্রুপের ওষুধ ব্যবহার করা যেতে পারে। ১/২ চামুচ করে ১/২ বার সেবন বা প্রয়োগ করতে হবে।

 

মলদ্বারে Suppository Glycerin supp:1.15gm/2.3gm

প্রেয়োজন অনুসারে মলদ্বারে দিতে হবে।


আশা করি আমাদের প্রত্যেকটি পোষ্ট আপনাদের ভালোলাগবে এবং উপকারে আসবে 

হুপিং কাশি/ Pertussis কী,লক্ষণ,জটিলতা, এবং চিকিৎসা।

মাম্প্‌স কী,লক্ষণ / উপসর্গ,মাম্প্স হলে কী কী করণীয়/ ( হোম রেমেডি) এবং চিকিৎসা।

Tonsillitis/টনসিলাইটিস কি? কারণ, লক্ষণ,কী খাওয়া যাবে/যাবে না এবং চিকিৎসা।

করোনাভাইরাসের (কোভিড-১৯) টিকার চতুর্থ ডোজ এবং করোনা মহামারির আতঙ্ক কমে গেলেও সংক্রমণ থেমে নেই।

নতুন পোলিও টিকা (এনওপিভি২)

টাইফয়েড জ্বর 

স্বামী স্ত্রীর রক্তের গ্রুপ এক হলে কি কোনো সমস্যা হয় ?

স্বাস্থ্য ভালো রাখতে খাওয়ার পর যে কাজগুলো করবেন না ?

দুধ -আনারস একসাথে খেলে কি মানুষ মারা যায় ? জেনেনিন এর সঠিক উত্তর 

পিরিয়ড চলাকালিন মেয়েরা যেসব কাজ থেকে বিরত থাকবেন 

পর্যাপ্ত ঘুম না হলে ক্ষতি কী  এবং জেনে নিন ঘুম না হলে কী করবেন ?

রাতকানা রোগ কী ? রাতকানা রোগ কেন হয় ? এবং এর প্রতিকার 

রক্তস্বল্পতা কি ? এর কারণ , লক্ষণচিহ্নচিকিৎসা এবং উপদেশ ?

কান পাকা রোগ কেন হয় এর কারণ,লক্ষণ,চিহ্ন এবং চিকিৎসা

কনজাংটিভাইটিস বা ( চোখ উঠা ) কি ? এর কারণ , লক্ষণ/চিহ্ন , চিকিৎসা এবং প্রতিরোধ 

 

NOTE: সকল ঔষধ রেজিষ্টার্ড চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী সেবন করুন