ডায়রিয়ার(পাতলা পায়খানা ) কি ?
সহজ কথায় বলতে গেলে ঘন ঘন পাতলা পায়খানা হওয়াকে ডায়রিয়া বলে বা ২৪ ঘন্টায় তিন বা তার অধিকবার পাতলা পায়খানা হওয়াকে ডায়রিয়া বলে ।
কিভাবে ডায়রিয়ার জীবাণু খাদ্যনালীতে প্রবেশ করেঃ
**মূলত: খাদ্য, পানীয় বা অপরিষ্কার হাত, গ্লাস, চামচ ইত্যাদি, কিংবা মুখে প্রবেশ করানো হয় এমন কোন বস্তুর মাধ্যমে ডায়রিয়ার রোগ জীবাণু খাদ্যনালীতে প্রবেশ করে।
ডায়রিয়ার পরিণতিঃ
ডায়রিয়ায় কলেরা চেনার উপায় সমূহ ঃ
✅যখন অন্ত্রে ভিবরিও কলেরা জীবাণু প্রবেশ করে ডায়রিয়ার সৃষ্টি হয় তখন তাকে কলেরা বলে। কোন রোগীর পাতলা পায়খানা শুরু হওয়ার পর খুব অল্প সময়ের মধ্যে যদি-
*চরম পানিস্বল্পতা হয় ।
*চাল ধোয়া পানির মত পাতলা পায়খানা হয় ।
*ঘন ঘন বমি হয় এবং ।
*বমি/ পায়খানায় পঁচা মাছের আষ্টের গন্ধ পাওয়া যাবে।
*রোগী অল্প সময়ে মধ্যে তৃতীয় স্তর বা মারাত্মক অবস্থায় চলে যাবে।
*রোগী দ্রুত দুর্বল হয়ে পড়ে ।
*প্রস্রাব বন্ধ হয়ে যায় এবং রোগী খুবই পিপাসর্ত হয় ।
তবে ঐ ধরনের রোগীদের কলেরা হয়েছে বলে ধারণা করা যায়।
পানিস্বল্পতা- ঃ
পানিস্বল্পতা কাকে বলে? ঃ
সুস্থ্য থাকার জন্য প্রয়োজনীয় পরিমাণ পানি ও লবণ জাতীয় পদার্থ না থাকলে তাকে পানিস্বল্পতা বলে।
ডায়রিয়া হলে পায়খানার সঙ্গে পানি এবং লবণ জাতীয় পদার্থ শরীর থেকে বেরিয়ে যায়।
এছাড়াও অধিক পরিমাণ বমির মাধ্যমেও শরীর তরল পদার্থ এবং লবণ হারাতে পারে।
শরীরের এই ক্ষতি যথাযথভাবে পূরণ না হলে স্বাভাবিক ভাবেই পানিস্বল্পতা দেখা দেয়।
পানিস্বল্পতা চেনার উপায়ঃ
* চোখের পাতা বসে যায় ।
* অবসন্ন, নেতিয়ে পড়া অজ্ঞান কিংবা ঘুমঘুম ভাব হয়।
* পানি পান করতেও কষ্ট হয় কিংবা একেবারেই পারেনা|
* ধীরে ধীরে বা অত্যন্ত ধীরে ধীরে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে যায়|
ডায়রিয়া প্রতিরোধের উপায়সমূহঃ
# হামের টিকা দেওয়া।
# স্বাস্থ্য সম্মত পায়খানা ব্যবহার করা।
# শিশুকে পুষ্টিকর বাড়তি খাবার খাওয়ানো।
# সব সময় টিউবওয়েলের পানি পান করুন। টিবউওয়েলের পানি না পাওয়া গেলে বিশোধিত পানি ব্যবহার করুন।
# হাঁড়ি- পাতিল, খাবার বাসন-পাত্রগুলো টিউবওয়েলের অথবা বিশোধিত পানি দিয়ে ধোয়ে নিবেন।
# দূগর্ন্ধযুক্ত খাবার খাবেন না। বাসি খাবার খেতে হলে অবশ্যই ভাল করে গরম করে খাবেন।
# সব ধরনের খাবার ও পানি ঢেকে রাখতে হবে।
# নিজে খাবার আগে, বাচ্চাকে খাওয়ানোর আগে, পায়খানার পর এবং বাচ্চাকে শোচানোর পর অবশ্যই হাত ধুবেন। (সাবান, ছাই অথবা মাটি দিয়ে দুই হাত কচলিয়ে পরিষ্কার পানি দিয়ে হাত ধুয়ে নিবেন।
# পুকুর, নদী ও টিউবওয়েলের আশেপাশে পায়খানা করবেন না এবং বাচ্চাদের পায়খানা বড়দের পায়খানার মতই ক্ষতিকর।
# ডায়রিয়া রোগীর পায়খানা/মল গর্ত করে পুঁতে ফেলুন।
# বাচ্চাকে প্রথম ৫ মাস বয়স পর্যন্ত কেবল মায়ের দুধ খাওয়াবেন।
ডায়রিয়া (Diarrhea)/ কলেরার চিকিৎসাঃ
Cotrimoxazole: গ্রুপের ঔষধ দেয়া যেতে পারে।
যেমন- ঔষধের নাম: Cotrim. Cotrim Ds. Megatrim. Megatrim Ds. Bactacin. Bactacin Ds. Senatrim. Senatrim Ds ইত্যাদি দেয়া যেতে পারে।
Sus:/ tab: 480mg/ 690mg
নিয়মাবলী: ১২ ঘন্টা পরপর ০৭ দিন দেয়া যেতে পারে।
অথবা,
Erythromycin: গ্রুপের ঔষধ দেয়া যেতে পারে।
যেমন- ঔষধের নাম: Eromycin. A-Mycin. Etrocin. Microcin ইত্যাদি দেয়া যেতে পারে।
Sus:/ tab: 250mg/500mg
নিয়মাবলী: ৬ ঘন্টা পরপর ০৭ দিন দেয়া যেতে পারে।
অথবা,
অথবা,
অথবা,
ডায়রিয়ার কারণে বমি হলে ঃ
- (অনডানসেটরন) Ondan Setron: গ্রুপের ঔষধ দেয়া যেতে পারে।
যেমন- ঔষধের নাম: Zofra. Emistat. Onasia. ইত্যাদি দেয়া যেতে পারে।
Syp:/ tab:
নিয়মাবলী: দৈনিক ৩ বার বমি থাকা পর্যন্ত দেয়া যেতে পারে।
ডায়রিয়ার কারণে পেটে ব্যাথা হলে- ঃ
Timonium Sulphate গ্রুপের ঔষধ দেয়া যেতে পারে।
যেমন- ঔষধের নাম: Algin. Visaralgin. Timozin. ইত্যাদি দেয়া যেতে পারে।
Syp:/ Tab: 50mg
নিয়মাবলী: দৈনিক ৩ বার পেট ব্যাথা থাকা পর্যন্ত দেয়া যেতে পারে।
বি: দ্র: পানি স্বল্পতা থাকলে (বড়দের ক্ষেত্রে) রোগীকে কলেরা স্যালাইন রগে দিতে হবে। প্রতি মিনিটে ৫০-৬০ ফোটা বা তার চেয়েও বেশী দেওয়া যেতে পারে।
পরামর্শঃ
রোগীকে বার বার খাবার স্যালাইন, ভাতের মাড়, ডাবের পানি, চিরার পানি, ইত্যাদি তরল ও নরম সব ধরনের খাবার রোগীকে বার বার খেতে দিতে হবে।
এগুলির মধ্যে কোন কোনটির কারণে পেট ফুলে যায় এবং রোগী অস্বাভাবিক ভাবে ঝিমিয়ে পড়ে। কখনো কখনো তা শিশুর মৃত্যুর কারণ হতে পারে, বিশেষত ১ বছরের কম বয়স্ক শিশুদের ক্ষেত্রে।
ডাইরিয়া হলে কখন রোগীকে হাসপাতালে বা চিকিৎসকের নিকট পাঠাতে হবে?
* তিন দিনের মধ্যে রোগীর অবস্থার উন্নতি না হলে।
* যদি বার বার পানির মতো পাতলা পায়খানা হতে থাকে।
* যদি বার বার বমি হতে থাকে।
* রোগীর যদি প্রচন্ড পিপাসা পেতে থাকে।
* মলে রক্ত দেখা দিলে।
* যদি জ্বর থাকে।রোগী যদি খাওয়া বা পান করা কমিয়ে দেয় বা ছেড়ে দেয়।
* রোগীর প্রস্রাব বন্ধ হয়ে গেলে। এটি ডায়রিয়া রোগের মারাত্মক একটি জটিলতা। যদি বিগত ২৪ ঘন্টার মধ্যে রোগীর প্রস্রাব না হয়ে থাকে তবে অবিলম্বে তাকে নিকটবর্তী চিকিৎসা কেন্দ্রে (স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে) পাঠাতে হবে।
আশা করি আমাদের প্রত্যেকটি পোষ্ট আপনাদের ভালোলাগবে এবং উপকারে আসবে ।
স্বামী স্ত্রীর রক্তের গ্রুপ এক হলে কি কোনো সমস্যা হয় ?
স্বাস্থ্য ভালো রাখতে খাওয়ার পর যে কাজগুলো করবেন না ?
দুধ -আনারস একসাথে খেলে কি মানুষ মারা যায় ? জেনেনিন এর সঠিক উত্তর ।
পিরিয়ড চলাকালিন মেয়েরা যেসব কাজ থেকে বিরত থাকবেন ।
পর্যাপ্ত ঘুম না হলে ক্ষতি কী । এবং জেনে নিন ঘুম না হলে কী করবেন ?
রাতকানা রোগ কী ? রাতকানা রোগ কেন হয় ? এবং এর প্রতিকার ।
রক্তস্বল্পতা কি ? এর কারণ , লক্ষণ, চিহ্ন, চিকিৎসা এবং উপদেশ ?
কান পাকা রোগ কেন হয় এর কারণ,লক্ষণ,চিহ্ন এবং চিকিৎসা
কনজাংটিভাইটিস বা ( চোখ উঠা ) কি ? এর কারণ , লক্ষণ/চিহ্ন , চিকিৎসা এবং প্রতিরোধ ।
NOTE: সকল ঔষধ রেজিষ্টার্ড চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী সেবন করুন ।