ইসলাম

  


ইসলাম আরবি শব্দ। আভিধানিক অর্থ হলো আনুগত্য করা, আত্মসমর্পন করা শাান্তির পথে চলা ইত্যাদি। ব্যবহারিক অর্থ  আল্লাহ তায়ালা ও রাসুল (স.) এর অনুগত্য করাকে ইসলাম বলে।


 শরীয়তের পরিভাষায়, আল্লাহ তায়ালার প্রতি আন্তরিকভাবে বিশ্বাস স্থাপন করে। তাঁর নিকট পরিপূর্ণভাবে আত্মসমর্পণ করা, বিনা তার যাবতীয় আদেশ-নিষেধের আনুগত্য করা এবং তাঁর দেওয়া বিধান ও হযরত মোহাম্মদ  (সা.)- এর দেখানো পথ অনুসারণ করে জীবন যাপন করাকে ইসলাম বলা হয়।

একটি হাদীসে মহানবীর (সা.) সুন্দরভাবে ইসলামের  মুল পরিচয় তুলে ধরেছেন,

 তিনি বলেন,

 ইসলাম হলো , তুমি এক কথায় সাক্ষ্য দেবে যে, আল্লাহ ব্যতীত কোন ইলাহ নেই। মোহাম্মদ  (সা.) আল্লাহর রাসুল, সালাত আদায় করবে, যাকাত প্রদান করবে, রমজানে রোজা পালন করবে,  এবং সামর্থ্য থাকলে বায়তুল্লাহর হজ আদাায় করবে (বুখারী ও মুসলিম)

আল্লাহ তা'আলা মানব জাতির হেদায়েতের জন্য যুগে যুগে বহু আদেশ-নির্দেশ বিধি বিধান প্রেরণ করেছেন। এসব আদেশ-নিষেধ শরীয়ত হিসেবে প্রদান করেছেন। শরীয়তের সর্বশেষ পূর্ণাঙ্গ ও ইসলাম।

এটি হলো মানবজাতির জন্য নির্দেশিত সর্বশেষ ও সর্বোত্তম জীবন বিধান। আল্লাহ তায়ালা এ সম্পর্কে বলেন,

নিশ্চয় আল্লাহর নিকট ইসলামই একমাাত্র মনোনীত ধর্ম বা জীবনব্যবস্থা (সূরা আল ইমরান, আয়াত ১৯) 

সুতরাং

 ইসলাম হলো আল্লাহ তা'আলার নিকট গ্রহণযোগ্য ধর্ম। আর যিনি ইসলাম অনুসারে যে জীবন পরিচালনা করেন তাকে বলা হয় মুসলিম বা মুসলমান।

ইসলামের ভূমিকা

ইসলাম হলো আল্লাহ তালার প্রবর্তিত ধর্ম বা জীবন বিধান। এটি মানব জাতির জন্য আল্লাহ তা’য়ালার একটি বিশেষ নিয়ামত । এটি পূর্ণাঙ্গ জীবনব্যবস্থা। মানব জীবনের সকল বিষয় ও সমস্যার পরিপূর্ণ সমাধানের দিকনির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

আল্লাহ তায়ালা বলেন,

 আজ আমি তোমাদের জন্য তোমাদের দিনকে পূর্ণাঙ্গ করলাম। আর  তোমাদের উপহার আমার নেয়ামতকে সম্পূর্ণ করলাম এবং ইসলামকে তোমাদের জীবন ব্যবস্থা হিসেবে মনোনীত করলাম (সূরা মায়িদা, আয়াত ৩)

মানুষের জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত সকল কাজ কর্মের যথাযথ দিকনির্দেশনা ইসলামে বিদ্যমান। ব্যক্তিগত পারিবারিক সামাজিক সাংস্কৃতিক অর্থনৈতিক রাজনৈতিক ও আন্তর্জাতিক সকল বিষয়ে ইসলামের যথাযথ ভাবে বর্ণনা করা হয়েছে।  ইসলামে মানুষের মৃত্যুর পরবর্তী জীবন বা পরকালের অবস্থার বর্ণনাও  রয়েছে।
 সুতরাং সুন্দর ও সুষ্ঠভাবে জীবন পরিচালনার জন্য ইসলামের বিকল্প নেই।

 ইসলাম শব্দটি (সিলমুন) মূলধাতু হতে নির্গত,সিলমুন অর্থ শান্তি। ইসলাম মানুষকে শান্তির পথে পরিচালনা করে। ইসলামী বিধি-বিধান মেনে চললে মানুষ দুনিয়া ও আখেরাতে পরিপূর্ণ শান্তিময় জীবন লাভ করতে পারে। এজন্য ইসলামকে শান্তির ধর্ম বলা হয়।

ইসলাম সর্বজনীন ধর্ম। এটি কোন কাল, বা জাতির জন্য সীমাবদ্ধ নয়। অন্যান্য ধর্মের নামকরণ যে সব ধর্মের, প্রবর্তক, প্রচারক, অনুসারী কিংবা জাতির নামে করা হয়েছে। কিন্তু ইসলাম সর্বজনীন ধর্ম  হওয়ার কারণে এর নামকরণ করাও নামে করা হয়নি।বরং মহান আল্লাহ ও রাসূলের আনুগত্য এর মাধ্যমে শান্তির পথে জীবন পরিচালনা করার উদ্দেশ্যে এর নাামকরন করা হয়েছে ইসলাম।

ইসলাম-শিক্ষার গুরুত্ব 


ইসলাম শিক্ষা হলো ইসলাম সম্পর্কে জ্ঞান লাভ করা। কোন কিছু বাস্তবায়ন করতে হলে প্রথমে সে সম্পর্কে জ্ঞান লাভ করতে হয়। যেমন, সাঁতার কাটতে হলে প্রথমে সাঁতার কি কিভাবে সাঁতার কাটতে হয়, ইত্যাদি শিখতে হয়। গাড়ি চালাতে হলে  গাড়ি চালানো  সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন করতে হয়। 

ঠিক তেমনি ইসলাম অনুযায়ী জীবন পরিচালনার জন্য ইসলাম সম্পর্কে প্রথমে জ্ঞান অর্জন করতে হয়। আর এর প্রধান মাধ্যম হলো ইসলাম শিক্ষা।

ইসলাম শিক্ষার মাধ্যমে আমরা আল্লাহ তাআলার ইবাদত ও অনুগত্য শিখতে পারি। আমাদের দৈনন্দিক জীবনে চলাফেরা ওঠা-বসা কিভাবে করতে হবে তা জানতে পারি। সততা ন্যায়পরায়নতা  দয়া,ক্ষমা, বিনয়-নম্রতা ইত্যাদি গুনের অনুশীলন করতে পারি। লোভ হিংসা মিথ্যাচার অহংকার পরনিন্দা ইত্যাদি খারাপ অভ্যাস পরিহার করে উত্তম চরিত্রের অধিকারী হতে পারি। সাম্য, মৈত্রী, ধৈয্য সহনশীলতা, পারস্পরিক সহযোগিতার মাধ্যমে সমাজ প্রতিষ্ঠা করার জন্য প্রয়োজনীয় জ্ঞান অর্জন করতে পারি। পরকালীন জীবনের জান্নাত  লাভ ও জাহান্নাম থেকে মুক্তির উপায় জানতে পারি। এক কথায় ইসলাম শিক্ষার মাধ্যমে আমরা দুনিয়া ও আখিরাতে শান্তি ও সফলতা লাভের দিকনির্দেশনা অর্জন করতে পারি।

আশা করি আমাদের প্রত্যেকটি পোষ্ট আপনাদের ভালোলাগবে এবং উপকারে আসবে ।