লোকাল এরিয়া নেটওয়ার্ক স্থাপন

                               লোকাল  এরিয়া নেটওয়ার্ক স্থাপন


আমরা নিশ্চয় ইমেইল ব্যবহার করে তথ্য আদান প্রদান করছি। ইন্টারনেট এই ইমেইল যোগযোগ মাধ্যম। ইন্টারনেট শব্দটি এসেছে মূলত:  ইন্টারন্যাশনাল নেটওয়ার্ক থেকে। ছোট ছোট নেটওয়ার্ক পরস্পরের সাথে যুক্ত হয়ে,এই গ্লোবল নেটওয়ার্কটি তৈরি হয়েছে। প্রত্যেকটি ছোট ছোট নেটওয়ার্ক যা আমাদের  ঘড় , একটি আফিস, একটি ভমনের,বা একটি ছোট এলাকায় বিদ্যমান কম্পিউটারগুলোকে সংযুক্ত করে একটি সীমাবদ্ধ পরিসরে তথ্য আদান প্রদান
বা বিনিময় করে তাকে লোকাল  এরিয়া নেটওয়ার্ক বা সংক্ষেপে (LAN) বলে। 
 


কম্পিউটার নেটওয়ার্ক  

কম্পিউটার নেটওয়ার্ক হচ্ছে এক  ধররনের সিস্টেম যা তথ্য বা রিসোর্স  শেয়ারিং এরে উদ্দেশ্য একাধিক কম্পিউটার বা ইলেকট্রনিক্স ডিভাইস কমিউনিকেশন মিডিয়ার মাধ্যমে একে অন্যের সাথে  যুক্ত থাকে। নেটওয়ার্ক  প্রধানত তিন ধরনের
যেমন: ১। লোকাল এরিয়া নেটওয়ার্ক  (ল্যান)
          ২। মেট্রোপলিটন এরিয়া নেটওয়ার্ক (ম্যান)
          ৩। ওয়াইড এরিয়া নেটওয়ার্ক (ওয়ান)

                                  
mh
computer network


 

লোকাল এরিয়া নেটওয়ার্ক  (ল্যান)

কম্পিউটার নেটওয়ার্ক  বলতে সবচেয়ে বেশি  লোকাল এরিয়া নেটওয়ার্ক  (ল্যান) এর নাম আসে। সহজেই তৈরি করা যায় বিধায় এর ব্যবহার অনেক। তাই কোনো একটি স্থানের কিছু ইলেকট্রনিক্স ডিভাইসকে একত্রিত করে ঘড়ে ওঠা নেটওয়ার্ককে লোকাল এরিয়া নেটওয়ার্ক বলা হয়। এই ডিভাইস গুলো হতে পারে কিছু কম্পিউটার, কিছু ফোন বা প্রিন্টার।
নিজেদের বসায়, ছোট-মাঝারি অফিস ও ব্যবসা- বানিজ্যে এই ধরনের নেটওয়ার্ক ব্যবহৃত হয় ।

লোকাল এরিয়া নেটওয়ার্কের বৈশিষ্ট্য

১. বর্তমানে এর মাধ্যমে সেকেন্ডে সর্বেোচ্চ ১জি.বি পর্যন্ত গতিত তথ্য আদান প্রধান করা যায়।
২. তবে সাধাারন গতি ১০ থেকে ১০০ পর্যন্ত হয়।
৩. সীমিত দুরত্বের মধ্যে এর  কার্যক্রম সীমাবদ্ব।
৪.শ্রেণি সংযোগের মাাধ্যমে কম্পিউটার সংযুক্ত হয়।
৫.ছোট এলাকার মধ্যে এই নেটওয়ার্ক সহজেই তৈরি করা যায়।
৬.নেটওয়ার্ক স্হাপন ও রক্ষানাবেক্ষণ সহজ।
৭.খরচ কম ও ব্যবহার করা সহজ।
৮.অনেক ডিভাইসে অ্যাকসেস পাওয়া যায়।
৯. রিপিটার, হাপ, নেটওয়ার্ক  ইন্টারফেস কার্ড ব্যবহার করে নেটওয়ার্ক কার্যক্ষমতা বাড়ানো যায়।
১০.এ নেটওয়ার্কে ডিভাইসসমূহ তারযুক্ত বা তারবিহিন  সংযোগ প্রধান করা যায়।
 

লোকাল  এরিয়া নেটওয়ার্ক এ ব্যবহৃত প্রয়োজনীয় উপকরন

১.কম্পিউটার বা ইলেকট্রনিক্স ডিভাইস 
২.RJ 45  কানেক্টর 
৩. ইউটিপি ক্যাবল- ক্যাটাগরি 4/5/6
৪.  ক্রিম্পিং টুলস
৫.ক্যাবল টেস্টার 
৬.ল্যান কার্ড
৭.সুইচ
৮. রাউটার

নেটওয়ার্ক টপোলজি

 কম্পিউটারের সাথে এক বা একাধিক কম্পিউটার যুক্ত হওয়ার প্রক্রিয়াকে নেটওয়ার্ক টপোলজি বলে।একটি  নেটওয়ার্কের Physical Device বা Component যেমন- Cabke,PC,Router ইত্যাদী যেভাবে পরস্পরের সাথে যুক্ত থাকে,তাকে বলা হয় Topology।  Network Topology মূলত নেটওয়ার্কের ফিজিক্যাল লে আউট বর্ণনা করে থাকে।Component Network এ মূলত ছয় ধরনের Topology ব্যবহৃত হয়।এগুলো হচ্ছে,
                                                                                  ১.Bus Topology (বাস টপোলজি)
                                                                                  ২.Ring Topology (রিং টপোলজি)
                                                                                  .Tree Topology(ট্রি  টপোলজি)
                                                                                    ৪. Star Topology (স্টার টপোলজি)
                                                                                 ৫. Mesh Topology(মেস  টপোলজি)
                                                                                    Hybride Topology (হাইব্রিট টপোলজি)

১। বাস টপোলজি (Bus Topology)

যে (Topology) তে একটি  মূল তারের সাথে সবটি Computer  সংযুক্ত থাকে তাকে বাস টপোলজি (Bus Topology) বলে। Bus Topology এর প্রধান ক্যাবলটিকে বলা হয়, Back Bone. Signal যখন Back Bone এ চলাফেরা করে তখন শুধুমাত্র প্রাপক  Computer টি  Data গ্রহণ করে এবং বাকিরা একে আগ্রাহ্য করে। ছোট আকারের নেটওয়ার্ক এই টপোলজি ব্যবহার করা সহজ,সাশ্রয়ী ও বিশ্বস্ত।
কোনো একেটি Computer এর ত্রুটি নেটওয়ার্কিং এ কোনো প্রভাব ফেলে না। তবে মূল ক্যাবলের সমস্যা পুরো নেটওয়ার্ককে ব্যবহৃত করে। Bus Topology এর Data transmission Speed কম।
Bus Topology


 ২.Ring Topology (রিং টপোলজি)

রিং (Topology) তে প্রত্যেকটি Computer তার পার্শ্ববর্তী Computer এর সাথে যুক্ত থাকে। এভাবে এর সর্বশেষ Computer টি আবার প্রথম Computer এর সাথে যুক্ত থাকে। কোনো Computer ডাট পাঠালে তা বৃত্তাকার পথে ঘুড়তে থাকে যতক্ষণ না নির্দি ষ্ট Computer গ্রহণ না করে। এ অবস্থায় কোনো কেন্দীয় Computer থাকে ন।
তাই প্রত্যেকটি Computer এর গুরুত্ব সমান।
  RingTopology


.Tree Topology (ট্রি  টপোলজি)

যে Topology তে Computer গুলো গাছের শাখা প্রশাখার মত বিন্যস্ত থাকে তাকে Tree Topology(ট্রি  টপোলজি) বলে।  এ Topology তে এক বা একাধিক স্তরের Computer, হোস্ট Computer এর সাাথে যুক্ত থাকে। অর্থ্যাৎ প্রথম স্তরের Computer গুলো দ্বিতীয় স্তরের Computer গুলোর হোস্ট হয়। একই ভাবে  দ্বিতীয় স্তরের Computer গুলো তৃতীয় স্তরের Computer গুলোর হোস্ট হয়। অফিস ব্যবস্থাপনার কাজে Tree Topology খুব উপযোগী। শাখা প্রশাখা
সৃষ্টির ফলে এ  Topology সম্প্রসারণ খুব সহজ। Root বা Server Computer এর সমস্যা হলে পুরো সিস্টেম অচল হয়ে যায়।
Tree Topology

 ৪. Star Topology (স্টার টপোলজি)

যে (Topology) একটি কেন্দ্রীয় নিয়ন্তনকারী Computer বা হোস্ট কম্পিউটারের সুইচ/ রাউটার এর সাথে  অন্যান্য Computer সংযুক্ত  করে  একটি নেটওয়ার্ক ঘড়ে তোলে, তাকে স্টার টপোলজি (Star Topology) বলে। এক্ষেত্রে  একটি Computer কেন্দ্রীয় Computer বা সুইচ এর মাধ্যমে তথ্য আদান প্রদান করে থাকে। এ ব্যবস্থায় কোনো একটি Computer নষ্ট হয়ে গেলে বাকি  নেটওয়ার্কে  তার প্রভাব পরে না। তবে যদি কেন্দ্রীয় Switch/Computer টি  নষ্ট হয় তাহলে পুরো নেটওয়ার্ক সিস্টেমটাই নষ্ট হয়ে যায়।  
Star topology

৫. Mesh Topology(মেস  টপোলজি)

যদি কোনোা নেটওয়ার্কে, ডিভাইস বা PC সমূহের মাঝে অতিরিক্ত সংযোগ থাকে তাহলে তাকে বলা হয় Mesh Topology(মেস  টপোলজি)। অধিকাংশ Mesh Topology সত্তিকারের Mesh Network নয়; এরা আসলে Hybride Mesh Network এতে শুধু কয়েকটি প্রয়োজনীয় বা অতিরিক্ত লিংক থাকে। Mesh Topology তে 
Data Communication এ অনেক বেশি নিশ্চয়তা থাকে এবং খুব সহজেই নেটওয়ার্কের সমস্যা সমাধান করা যায়।
 তবে এই Topology তে নেটওয়ার্ক Installation ও Configuration  অনেক বেশি জটিল। অতিরিক্ত  Link স্থাপন করতে হয় বলে খরচ অনেক বেড়ে যায়।
Mesh Topology

  Hybride Topology (হাইব্রিট টপোলজি)

বাস, রিং স্টার ইত্যাদি Topology এর সমন্বয়ে গঠিত Topology কে Hybride Topology বলে। উদাাহরণ স্বরূপ Internet কে Hybride Topology বলা হয়। কেননা  ইন্টারনেট হলো বৃহৎ পরিসরে একটি নেটওয়ার্ক যেখানে সব ধরণের  Topology  এর সংমিশ্রণ দেখা যায়। 
এ Topology তে প্রয়োজন অনুযায়ী নেটওয়ার্ক বৃদ্ধি  করার সুযোগ রয়েছে।একটি অংশ নষ্ট হলে সম্পূর্ণ অংশ নষ্ট না হয়ে অংশ বিশেষ নষ্ট হয়। 
Hybrid Topology



 সুইচ এবং রাউটার এর মধ্যে পার্থক্য,

সুইচ রাউটার
১। সুইচ ব্যবহার করা হয় একই নেটওয়ার্ক এর মাঝে অবস্থিত,অনেক গুলো কম্পিউটার এর মাঝে যোগাযোগ স্থাপনের জন্য। ১। অপরপক্ষে রাউটার ব্যবহৃত হয়, অনেক গুলো নেটওয়াকর্র এর মাঝে যোগাযোগ স্থাপনের মাধ্যম হিসেবে।
২। সুইচ ল্যানে ব্যবহার করা হয়। ২। রাউটার ল্যান ও ম্যান উভয় ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হয়।
৩।সুইচ প্যাকেট ও ফ্রেম উভয় আকারে ডাটা পাঠায়। ৩।রাউটার প্যাকেট আকারে ডাটা পাঠায়।

আশা করি আমাদের প্রত্যেকটি পোষ্ট আপনাদের ভালোলাগবে এবং উপকারে আসবে ।