বিয়ের আগে আমরা পরিবারের সদস্য, আত্মীয়-স্বজনদের নিয়ে যাবতীয় গবেষণা করি, কিন্তু ভুলে যাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল স্বামী-স্ত্রীর রক্তের গ্রুপ, আসুন জেনে নেওয়া যাক এ সম্পর্কে কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য-
স্বামী-স্ত্রীর রক্তের গ্রুপ নিয়ে আলোচনা করার আগে প্রথমে রক্তের গ্রুপ সম্পর্কে কিছু জানা দরকার। মূলত রক্তের গ্রুপকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়।
একটি হল ABO সিস্টেম (A, B, AB এবং O), অন্যটি হল Rh ফ্যাক্টর {Rh positive (+ve) এবং Rh নেগেটিভ (-ve)। এর মানে Rh ফ্যাক্টর নির্ধারণ করবে রক্তের গ্রুপ পজিটিভ নাকি নেগেটিভ হবে।
তারপর রক্তের গ্রুপগুলো হলো: A+ve, A-ve, B+ve, B-ve, AB+ve, AB-ve O+ve, O-ve।
blood Group |
অন্য গ্রুপের রক্ত কারো শরীরে দিলে কী হয়?
আরএইচ নেগেটিভ গ্রুপের একজন ব্যক্তিকে যখন আরএইচ পজিটিভ রক্ত দেওয়া হয়, তখন সাধারণত প্রথমবার কিছুই ঘটে না।
কিন্তু এর বিপরীতে রোগীর শরীরে অ্যান্টিবডি তৈরি করা হবে, যাতে রোগী আবার পজিটিভ রক্ত নিলে তার রক্তকণিকা ভেঙে যায়, যা অনেক সমস্যার সৃষ্টি করে।
যেমন জ্বর, কিডনি ফেইলিউর, আকস্মিক মৃত্যু ইত্যাদি এই সমস্যাকে ডাক্তারি পরিভাষায় ABO অসামঞ্জস্য বলা হয়।
স্বামী-স্ত্রীর রক্তের গ্রুপ কেমন হওয়া উচিত ?
স্বামীর রক্তের গ্রুপ পজিটিভ হলে স্ত্রীর রক্তের গ্রুপও পজিটিভ হতে হবে। আর স্বামীর রক্তের গ্রুপ নেগেটিভ হলে স্ত্রীর রক্তের গ্রুপ পজিটিভ বা নেগেটিভ হতে হবে।
তবে স্বামীর রক্তের গ্রুপ পজিটিভ হলে স্ত্রীর রক্তের গ্রুপ যেন কোনোভাবেই নেগেটিভ না হয়। এক্ষেত্রে স্ত্রীর রক্তের গ্রুপ নেগেটিভ হলে স্বামীর রক্তের গ্রুপও নেগেটিভ হতে হবে।
স্বামীর রক্তের গ্রুপ পজিটিভ এবং স্ত্রীর রক্তের গ্রুপ নেগেটিভ হলে কী হবে?
রক্তের গ্রুপ মিলে গেলে সমস্যা নেই। যাইহোক, যদি স্ত্রী নেতিবাচক হয় এবং স্বামী ইতিবাচক হয়, তাহলে 'প্রাণঘাতী জিন' বা 'মেরুন জিন' নামে একটি জিন তৈরি হয় যা পরবর্তীকালে জাইগোট গঠনে বাধা দেয় বা জাইগোটকে মেরে ফেলে। সেক্ষেত্রে মৃত শিশুর জন্ম হয়।
স্বামীর রক্তের গ্রুপ পজিটিভ হলে সন্তানের রক্তের গ্রুপও পজিটিভ হবে। নেগেটিভ ব্লাড গ্রুপের মায়ের যখন পজিটিভ ভ্রূণ হবে তখন সাধারণত প্রথম সন্তানের জন্য কোন সমস্যা হবে না। কিন্তু প্রসবের সময় পজিটিভ ভ্রূণের রক্ত প্ল্যাসেন্টাল বাধা ভেদ করে এবং প্ল্যাসেন্টাল ডিসপ্লেসমেন্টের সময় মায়ের শরীরে প্রবেশ করে।
প্রসবের সময় মায়ের শরীরে যে রক্ত প্রবেশ করবে তা প্রসবের কয়েক মাসের মধ্যে মায়ের শরীরে আরএইচ অ্যান্টিবডি তৈরি করবে। মা যখন দ্বিতীয় সন্তানের জন্ম দেয়, তার ভ্রূণের রক্তের গ্রুপ যদি আবার পজিটিভ হয়,
তবে মায়ের শরীরে আগে যে আরএইচ অ্যান্টিবডি তৈরি হয়েছিল তা প্ল্যাসেন্টাল বাধা ভেদ করে শিশুর শরীরে প্রবেশ করবে। আর যখন Rh অ্যান্টিবডি ভ্রূণের শরীরে প্রবেশ করে, তখন ভ্রূণের RBC-এর সাথে অ্যাগ্লুটিনেশন হবে, যার ফলে RBC ভেঙে যাবে। একে চিকিৎসা পরিভাষায় "Rh incompatibility" বলে।
মা বাবার রক্তের গ্রুপ এক হলে কি হয়।
অনেকেই মনে করেন বাচ্চার মা-বাবার দুজনের রক্তের গ্রুপ একই রকম হলে হয়তো তাদের বাচ্চার রোগ হতে পারে। বিষয়টি আসলে সেরকম না।
বাচ্চার রোগ সাধারণত বংশগত কারণে হয়ে থাকে। একই বংশের মধ্যে যদি মা-বাবার বিয়ে হয়, তাহলে সেক্ষেত্রে বাঁচার অনেক ধরনের রোগ হয়ে থাকে, যেমন- থ্যালাসেমিয়া।
সন্তান জন্মদানে রক্তের গ্রুপের গুরুত্ব ।
প্রথম সন্তান সুস্থ, দ্বিতীয় থেকে সমস্যা । স্বামী-স্ত্রীর রক্তের গ্রুপ মিলে গেলে কোনো সমস্যা হয় না ।
তবে স্ত্রী যদি নেগেটিভ হয় আর স্বামী যদি পজিটিভ হয় তাহলে 'লিথাল জিন´ বা 'মারন জিন´ নামে একটি জিন তৈরি হয় যা পরবর্তীতে জাইগোট তৈরিতে বাঁধা দেয় বা জাইগোটকে মেরে ফেলে । সেক্ষেত্রে মৃত বাচ্চার জন্ম হতে পারে ।
রক্তের গ্রুপ নির্ণয়ের প্রয়োজনীয়তা ।
রক্তের গ্রুপিং জানার প্রয়োজনীয়তা যে কত বেশি তা নতুন করে বলার কিছু নেই।
ইন্টারন্যাশনাল সোসাইটি অফ ব্লাড ট্রান্সফিউশন অনুযায়ী ৩২ টি গ্রুপিং করা যায়। এর মধ্যে ABO grouping সব থেকে বেশি গুরুত্বপূর্ণ।
Rh typing, নেগেটিভ বা পজেটিভ ব্লাড গ্রুপ বোঝার জন্যে ABO grouping এর সাথে ব্যবহার হয়।
আশা করি আমদের প্রত্যেকটা পোষ্ট আপনাদের উপকারে আসবে ।
জেনে নিন, দুধ -আনারস একসাথে খেলে কি মানুষ মারা যায় ? জেনেনিন এর সঠিক উত্তর ।
বাংলাদেশ স্বাস্থ্যসেবা সাধারন জ্ঞান,
ডিপ্লোমা ইন মিডওয়াইফারি কোর্সে ভর্তি পরিক্ষায় আসা (বাংলা) নৈবেতীক ২০১৮ -২০১৯ ।
বাংলাদেশের সকল জাতীয় দিবস সমূহ ।
Sentence কাকে বলে ও কত প্রকার । জানুন একদম সহজ ভাবে ।
বাংলা একাডেমির সর্বশেষ বানানের নিয়ম অনুসারে কিছু শুদ্ধ ।